কুলাউড়ায় ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসা সুপার কারাগারে


বিশেষ প্রতিনিধিঃ কুলাউড়ার জালালিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুস শহীদকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতে ওই সুপার আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে আদালত তাঁকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে নির্যাতিতা এক ছাত্রীর বাবা গত বছরের ১৯ আগস্ট মৌলভীবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলা (নং-২৮৮/১৯ইং) দায়ের করলে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম পংকি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের বিচারক বাদী ও বিবাদীপক্ষের শুনানী শেষে যৌন নিপীড়ন আইনের ১০ ধারায় জালালিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুস শহীদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

দীর্ঘ তদন্তের পর পিবিআই অভিযুক্ত মাদ্রাসার সুপার শহীদকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরই প্রেক্ষিতে আদালত ৮ জানুয়ারী তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করেন। এদিকে শহীদের গ্রেপ্তারে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকার সচেতন মহল স্বস্তিপ্রকাশ করেন।

জানা যায়, কুলাউড়া জালালীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুস শহীদ কর্তৃক শ্লীলতাহানির শিকার হন মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর ৭ জন ছাত্রী। এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে ১৫ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র গত বছরের ৩১ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া সুপারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে ১ নভেম্বর মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রী ও তাঁর পিতা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে কোন প্রতিকার না পেয়ে ওই ছাত্রীর পিতা অবশেষে ১৯ আগস্ট মাদ্রাসা সুপার আব্দুস শহিদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করলে ট্রাইব্যুনাল পিবিআইকে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই এর তদন্তে ঘটনার সত্যতাসহ সুপার মাওলানা আব্দুস শহিদের অনিয়ম ধরা পড়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post