মসজিদের টাকা ও জমি আত্মসাতের অভিযোগ !


বিশেষ প্রতিনিধিঃ মুসলমানদের পবিত্র জায়গা মসজিদ, যেখানে মানুষ আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার জন্য তার সাধ্য মত খেদমত করে। অথচ সেই মসজিদের টাকা ও জায়গা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ৪ নং খাদিম পাড়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের পূর্ব ভাট পাড়া গ্রামে।
গত শুক্রবার পুর্ব ভাট পাড়া গ্রাম বাসীরা এক পঞ্চায়েত বৈঠক এর আয়োজন করেন। ময়না মিয়ার সভাপতিত্বে এ বৈঠকে এলাকার প্রবীণ মুরব্বি, যুবকসহ সর্বসাধারণ মানুষ অংশ গ্রহন করেন। আর সেই বৈঠক থেকে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

এলাকার মুরব্বিরা অভিযোগের আঙুল তুলেন পুর্ব ভাট পাড়া মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারির দিকে। অভিযোগ কারীরা বলেন দীর্ঘ বারো বছর আগে ১২ সদস্যের মসজিদ কমিটি গঠন করার পর থেকেই সভাপতি খালিক মিয়া ও সেক্রেটারি তারু মিয়া তাদের স্বেচ্ছাচারী আচরণ শুরু করেন। পূর্ব ভাট পাড়া জামে মসজিদ নির্মাণে এলাকার সকলের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার অনুদান আসে।

গত ৩ বছর আগে মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সেই টাকার কোন হিসেব মিলছে না বলে এলাকাবাসীর দাবি। গত ২ বছর আগে এলাকাবাসী মসজিদ নির্মাণের হিসেব চাইলেও হিসেব দিতে টালবাহানা করছেন তারু মিয়া ও খালিক মিয়া। তাছাড়া মসজিদের নাম ব্যবহার করে নিজেদের ব্যক্তিগত মামলা পরিচালনা করতে মসজিদের একাউন্ট থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা কমিটির সদস্যরা ব্যয় করেন। যা এলাকার কেউই অবগত করা হয় নি। শুধু তাই নয় মসজিদ নির্মাণের টাকা কমিটির কোষাধক্ষের কাছে না রেখে নিজেদের একাউন্টে টাকা রেখে ব্যবসা করতে সেক্রেটারি তারু মিয়া, খালিক মিয়া, ও কমিটির অন্য সদস্য তুরণ মিয়া। এর আগেও তুরন মিয়ার বিরুদ্ধে মসজিদের ১০০ টি ফ্যান আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায়।

মসজিদ কমিটির ১২ সদস্যের মধ্যে অন্যতম সদস্য হান্নান মিয়া বলেন, তাদের এই অসাধু কার্যকলাপের জন্য তিনি এই কমিটির কার্যক্রম থেকে অব্যহতি নেন। সেক্রেটারি তারু মিয়ার বড় ভাই ময়না মিয়া বলেন, মজিদের জায়গা ৩৮ ডিসিমেল হলেও মসজিদ নির্মাণ করা হয় ২৯ ডেসিমেল জায়গায় বাকী জায়গার কোন হিসেব নেই।
তাছাড়া এ পর্যন্ত অনেক বার মসজিদ নির্মাণের হিসেব চাইলেও কমিটির সদস্যরা হিসেব দিতে টালবাহানা করে আসছেন। মসজিদের সাবেক মুতওয়াল্লী সুয়া মিয়া বলেন, মসজিদের জায়গা ৩৮ ডেসিমেল হলেও বর্তমানে আছে ২৯ ডেসিমেল। বাকী জায়গা খালিক মিয়া গং রা ভোগ দখল করে খাচ্ছেন। এ নিয়ে তারা এর আগে অনেক বার প্রতিবাদ করলেও তাদের কে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।

এলাকার প্রবীণ মুরব্বি জমির মিয়া বলেন, মসজিদ কমিটি তাদের না জানিয়ে মসজিদের পাশ দিয়ে রজাক মিয়ার বাড়িতে যাওয়ার যে রাস্তা ছিল সেই রাস্তা বন্ধ করে মামলা করেন তারু মিয়া খালিক মিয়া ও তুরন মিয়া। সেই মামলায় প্রায় ১২ লক্ষ টাকা তারা ব্যয় করেন, যা এলাকার কেউ জানে না। এছাড়া মসজিদ কমিটির সাবেক সেক্রেটারি মরহুম ফিরোজ আহমদের ছেলে রুহেল আহমদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই খালিক মিয়া, তারু মিয়া, তুরন মিয়া সহ মসজিদ কমিটির এই সিন্ডিকেট মসজিদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
১২ বছর ধরে তারা কমিটির মধ্যে বহাল তবিয়তে বসে আছেন। কেউ তাদের কিছু বললে, মসজিদের টাকার হিসেব চাইলে ভয় ভীতি দেখিয়ে ধমিয়ে রাখেন। শুধু তাই নয় মসজিদের জন্য টাইলস ক্রয় করলেও সেই টাইলস শুকুর মিয়া তার বাড়িতে ব্যবহার করেছেন। তাছাড়া মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে সভাপতি খালিক মিয়ার ছত্রছায়ায় তার ছেলে শুকুর মিয়া প্রতি রাতে মদ খেয়ে এলাকার মানুষদের গালাগাল করেন, মরধর করেন। এ নিয়ে ইউ পি সদস্য ও চেয়ারম্যান অবগত আছেন।

বৈঠক শেষে সভাপতি ময়না মিয়া ‘সিলেট সমাচার’ কে জানান, এলাকাবাসীর একটাই দাবী মসজিদের নির্মাণের সঠিক হিসেব, মসজিদের জায়গা পুনরুদ্ধার এবং এই কমিটির অসাধু কার্যকলাপ ও টাকা আত্মসাতের বিষয়টা তারা ইউ পি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়নের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে তুলে ধরবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post