সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত : ১৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজার জেলায় তৃতীয় দফা বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি দীর্ঘ স্থায়ী রুপ নিয়েছে। গত ২দিন উজানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এখনও জেলা সদরের সাথে বড়লেখা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলায় মোট ১৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত খোলা হয়েছে ২৯টি বন্যা কবলিত মানুষের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র।

অপর দিকে নতুনকরে রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুড়া, নাজিরাবাদ ও গিয়াসনগর ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ সব এলাকার রাস্তাঘাট সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

রমজান ও ঈদের টানা ছুটির পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষার্থীরা যেতে পারেনি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আলিম জানান, জেলায় মোট ১৪২টি প্রাথমিক স্কুল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

অপর দিকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, হাওর পাড়ের মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে এবং তলিয়ে যাওয়ায় জেলায় ৪২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। পানি কমলে এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম আবার শুরু হবে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেকারণে হাকালুকি হাওরের পানি ভাটির দিকে প্রবাহিত হতে না পেরে উজানে বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মার্চ ও এপ্রিলের বন্যার পর এটি মৌলভীবাজারে ৩য় দফা দীর্ঘস্থায়ী বন্যা।

এদিকে স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাওর, নদী, খাল-বিল ও জলাধারগুলো ভরাট ও দখল হয়ে যাও্য়ায় পানি ধারণ ও প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বন্যা এমন রূপ নিয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলায় সর্বশেষ ২৯৪ মেট্রিকটন জিআর চাউল ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা এবং ৫৯ হাজার ২০০ ভিজিএফ কার্ডের অনূকূলে ১০ কেজি করে চাউল বিতরণ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে তিন ধাপে ৬৫০ মেট্রিকটন চাল, ৩০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ছাড়াও তিনমাসের জন্য ৫ হাজার ভিজিএফ কার্ডের অনুকূলে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল এবং ৫০০ টাকা করে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম রোববার কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল জিআর চাউল, জিআর ক্যাশ ছাড়াও ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেন। খাবারের মধ্যে রয়েছে চিড়া, চিনি, টোস্ট বিস্কুট ও মুড়ি।

Post a Comment

Previous Post Next Post