এস আলম সুমন: এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। ইতিপূর্বেও দুএকটি ধরা পড়লেও এবছর হাওরে পানি বেশি থাকায় ইলিশ একটু বেশি ধরা পড়ছে । এ নিয়ে জেলে ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে জেলেদের জালে ধরা পড়া বেশিরভাগই ঝাটকা ইলিশ। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন শুধু মাত্র আগাম বন্যা হওয়ায় প্রবল স্রোতে এগুলো হাওরের সাথে সংযুক্ত নদী দিয়ে মাইগ্রেট হয়ে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবছর বন্যা ও পাহাড়ী ঢল নামায় হাকালুকি হাওর মুলত কুশিয়ারা নদীর সাথে সংযুক্ত। কুশিয়ারার পানি মিলিত হয়ে মেঘনা নদীতে। ফলে প্রজননের মৌসুম হওয়ায় ইলিশ মাছ ¯্রােতের বিপরীতে উজানের দিকে এসে হাকালুকিতে ঢুকে পড়েছে। হাওরের জুড়ী উপজেলার অংশের চাতলা, তুরল বিল এলাকার ফানাই নদী অববাহিকায় জেলেদের জালে ধরা পড়ে বড় ইলিশসহ ঝাটকা। ইলিশগুলোর তেমন স্বাদ নেই। জেলেরা জানায়, ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা না পড়লেও প্রতিদিনই জালে অন্যান্য মাছের সাথে ৫-৬টি ছোট বড় ইলিশ ধরা পড়ে। ধরা পড়া ইলিশের ওজন সর্বনিম্ন ২ শ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৯ শ গ্রাম হয়ে থাকে। তবে বড় ইলিশ খুবই কম, ঝাটকার সংখ্যাই বেশি।
হাকালুকি হাওরে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা সিএনআরএসের ক্রেল প্রকল্পের কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, হাওরে মুলত আগে ইলিছ মাছ পাওয়া যেত তবে এবছর কিছুটা বেশি সংখ্যক ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। তিনি আরও বলেন এবার কিছু ইলিশ বড় পাওয়া গেলেও জেলেদের জালে ধরা পড়া বেশিরভাগই ঝাটকা ইলিশ।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদ জানান, আগাম বন্যা হলে হাকালুকি হাওরে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। এ বছর কিছু বড় ও ছোট ইলিশ পাওয়া গেছে। তবে ঝাটকার পরিমাণ বেশি। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আ ফ ম শফিকুজ্জামান বলেন, এ বছর আগাম বন্যা হওয়ায় কুশিয়ারা নদী হয়ে মেঘনা নদী থেকে কিছু ইলিশ প্রজননের জন্য মাইগ্রেট হয়ে হাওরে ঢুকে পড়েছে। এগুলোর তেমন স্বাদ নেই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। হাওরে ধরা পড়া কিছু ইলিশ সর্বোচ্চ ৮শ গ্রাম এবং সর্বনিম্ন ২শ গ্রাম। অন্যান্য বছর মাঝে মধ্যে দুএকটি পাওয়া গেলেও এবছর একটু বেশি ইলিশ ঢুকেছে হাওরে। তবে ইলিশ মাছ যে পরিবেশ এবং যে খাবার খায় এগুলো হাওরে নেই। এজন্য হাওরে ইলিশের ভবিষ্যৎ নেই। যে বছর বন্যা বেশি হবে সে বছরই এরকম ইলিশ পাওয়া যাবে।