আমিন জাহানঃ ভিলিয়ার্সের সেঞ্চুরির জবাবটা খুব ভালো করেই দিচ্ছিলেন রোহিত শর্মা। একটা সময় দলের অবস্থানও ইতিবাচক মনে হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎই রোহিতের রথের চাকা থামিয়ে দিলেন আফ্রিকান বোলাররা। তাতে করে ভারতেরও রানের চাকা থমকে গেলো। আর তাতে ফলাফল যা হওয়ার শেষ পর্যন্ত তাই হলো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ হারের পর প্রথম ওয়ানডেতেও পরাজয়ের স্বাদ পেলো ভারত। রবিবার ভারতের কানপুরের গ্রীণ পার্ক স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩০৪ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে রোহিত শর্মার অন্যবদ্য সেঞ্চুরিতেও শেষ রক্ষা হলো না ধোনি বাহিনীর। জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে প্রোটিয়া বোলার রাবাদার পেস বোলিংয়ে পর্যুদস্ত হয়ে মাঠ ছাড়লো শাস্ত্রীর শিষ্যরা। বিপরীতে ৫ রানের ফুরফুরে জয় পেলো আমলা-ভিলিয়ার্সরা। এর আগে সকালে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ৩০৪ রানের টার্গেট দিয়েছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়া অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্সের অপরাজিত শতকে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রান সংগ্রহ করে সফরকারীরা। বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় খেলাটি। সকালে কানপুরের গ্রীণ পার্কে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। প্রোটিয়াদের হয়ে ইনিংসের সূচনা করতে নামেন কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলা। দলীয় ৪৫ রানের মাথায় ডি কক ব্যক্তিগত ২৯ করে আউট হন। এরপর ফ্যাফ ড্যু প্লেসিকে সাথে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৯ রান যোগ করেন আমলা। কিন্তু দলীয় ১০৪ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৩৭ রান করে অমিত মিশ্রর বলে বোল্ড হয়ে সাঝঘরে ফেরেন আমলা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ভিলিয়ার্সের সাথে ৪৮ রানের জুটি গড়েন ড্যু প্লেসিস। তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৭৭ বলে দলের জন্য প্রয়োজনীয় ৬২ রান করেন তিনি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ডেভিড মিলারকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন অধিনায়ক ভিলিয়ার্স। কিন্তু দলীয় ১৯৭ রানের মাথায় মিলার অমিত মিশ্রর দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। ব্যক্তিগত ১৩ রান করে আউট হন তিনি। এরপর ডুমিনিও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১৫ রান করে উমেশ যাদবের বলে কিপার ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। কিন্তু একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করে যান ভিলিয়ার্স। ষষ্ঠ উেইকেট জুটিতে ফারহান বিহারডিয়ানকে নিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন তিনি। শেষপর্যন্ত নিজের ২১তম সেঞ্চুরি করে ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন ভিলিয়ার্স। ৭৩ বলে ৬ ছক্কা ও ৫ চারের সাহায্যে এ রান করেন ভিলিয়ার্স। বিহারডিয়ান করেন ১৯ বলে ৩৫ রান। শেষ ৪.৫ ওভারে দলের জন্য প্রয়োজনীয় ৬৫ রান সংগ্রহ করেন ভিলিয়ার্স ও বিহারডিয়ান। ভারতীয় বোলারদের হয়ে স্পিনার অমিত মিশ্র ও পেসার উমেশ যাদব ২টি করে উইকেট নেন। এছাড়া রবিচন্দ্র অশ্বিননেন ১ উইকেট। আর এই জয়ের ফলে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকা। অপরদিকে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই শেখর ধাওয়ানের উইকেট হারায় ভারত। অপর অপেনার রোহিত শর্মা ১৪১ রান করে আউট হয়ে যখন প্যাভেলিয়নে ফেরত যাচ্ছিলেন তখন ভারতের অবস্থান সুবিধাজনকই ছিলো। তবে মাঝপথে কোহলি-রায়না-ধোনিদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় পরাজয়ের লজ্জা নিয়ে নতমস্তকে মাঠ ছাড়তে হলো টিম ইন্ডিয়াকে। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকাই একমাত্র দল যারা কানপুরে আগে ব্যাট করে ৩ শতাধিক রান সংগ্রহ করেছে। তাই ভারতের জন্য এ রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে আনা যে কঠিনই হবে তা আগে থেকেই ধারণা করছিলো কেউ কেউ।