বিশ্বকাপ বাছাইয়ে মাঠের বাইরে মেসি-নেইমার

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে মাঠের বাইরে মেসি-নেইমার
স্পোর্টস ডেস্কঃ একজনের ইনজুরি, অন্যজনের ওপর ফিফার নিষেধাজ্ঞা। অথচ দুজনই বর্তমান ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা। দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুও বলা যেতে পারে এই ফুটবল শিল্পীকে। অথচ শুরু হতে যাওয়া ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দুজনের কেউই নিজ দেশের জার্সি গায়ে মাঠ নামতে পারবেন না। বিষয়টি যেন কিছুতেই মানতে পারছে না ফুটবলপ্রেমীরা। কারণ একটাই, মেসি-নেইমার বলে কথা। কিন্তু বাছাই পর্বে যে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের জার্সি পড়ে মাঠে তাদের দেখা যাবে না সেটি এখন নিশ্চত করেই বলা যায়। আর তাই মেসি-নেইমারের মতো বিশ্ব তারকাদের বাইরে রেখেই শুরু হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে পথে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বাছাইপর্বের ম্যাচ। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের দুই পরাশক্তি ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা নিজেদের অঞ্চলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকার দুঃসহ স্মৃতিকে ভুলে নতুন করে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব মিশন শুরু করতে চাচ্ছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়েকে পিছনে ফেলে এবারের কোপা আমেরিকা শিরোপা জিতেছে স্বাগতিক চিলি। প্যারাগুয়ের কাছে পরাজিত হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালেই ব্রাজিলের কোপা আমেরিকা মিশন শেষ হয়ে যায়। গত বছর ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে জার্মানদের কাছে বিধ্বস্ত হবার দুঃসহ স্মৃতি থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেনি দুঙ্গা বাহিনী। কোপা আমেরিকায় সেই স্মৃতি ভোলার একটি সুযোগ আসলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি সেলেসাওরা। অন্যদিকে ফাইনালে চিলির কাছে টাইব্রেকারে পরাজিত হয়ে আর্জেন্টিনাকে রানার্স-আপ শিরোপা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। বিশ্বকাপের ফাইনালেও জার্মানদের কাছে অতিরিক্ত সময়ের একমাত্র গোলে পরাজিত হয়ে হতাশ হয়েছিল মেসি বাহিনী। ১৯৯৩ সালের পরে বড় কোন টুর্নামেন্টে শিরোপা বিহীন আর্জেন্টাইনরা কোনভাবেই নিজেদের প্রমান করতে পারছে না। আর এসবকে পিছনে ফেলে নতুনভাবে বিশ্বকাপে মিশন শুরু করতে বদ্ধপরিকর দু’দলই। এই লক্ষ্যে ব্রাজিল চিলির বিপক্ষে খেলতে সানটিয়াগোতে যাবে। আর আর্জেন্টিনা নিজেদের মাঠ বুয়েন্স আয়ার্সে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে। কোপা আমেরিকার সাফল্যে চিলি এই ম্যাচে ফেবারিট হলেও ইতিহাস অবশ্য ব্রাজিলের পক্ষেই কথা বলছে। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে মাত্র একবারই চিলির বিপক্ষে পরাজিত হয়েছিল ব্রাজিল। ২০০২ সালের ঐ ম্যাচে সেলেসাওরা ৩-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল। ঐ পরাজয়ের পরে ১৪ ম্যাচে ব্রাজিল ১২টি জয়ী হয়েছে ও পরাজিত হয়েছে মাত্র একটিতে। অতি সম্প্রতী মার্চে লন্ডনে একটি প্রীতি ম্যাচে চিলিয়ানদের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ী হয় ব্রাজিল। ইনজুরি আক্রান্ত লিভারপুল তারকা ফিলিপ কোটিনহোর স্থানে দীর্ঘদিন পরে জাতীয় দলে ফেরা অভিজ্ঞ কাকা বলেছেন, প্রতিটি ম্যাচেই নিজস্ব কিছু ইতিহাস থাকে। সময়ের সাথে অনেক কিছুই পাল্টে যায়। মূল কথা হচ্ছে আমরা যেখানেই চিলিকে মোকাবেলা করেছি সবসময়ই ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল। ব্রাজিল ডিফেন্ডার ডেভিড লুইজ বলেছেন, চিলির বিপক্ষে যেকোন ম্যাচই বেশ কঠিন। কিন্তু আমরা জেতার ব্যপারে বদ্ধপরিকর। একটি ক্ষেত্রে অবশ্য ব্রাজিল কালকের ম্যাচে কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকতে পারে, বহিষ্কারাদেশে থাকা অধিনায়ক নেইমারের অনুপস্থিতি। জুনে কলম্বিয়ার বিপক্ষে কোপা আমেরিকা ম্যাচে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়লে নেইমারকে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করে ফিফা ডিসিপ্লিনারি কমিটি। ইতোমধ্যেই দুই ম্যাচ পার হয়ে যাওয়ায় বাছাইপর্বে দুটি ম্যাচে থাকছেন না নেইমার। যদিও এনিয়ে এখনো কোন ধরনের চাপ দেখা যায়নি ব্রাজিল শিবিরে। অনুশীলন সেশনের পুরো দলকে বেশ নির্ভার দেখা গেছে। এদিকে বুয়েন্স আয়ার্সে ইকুয়েডরের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে ছাড়া মাঠে নামতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। গত মাসে বার্সেলোনার হয়ে লা লিগায় লাস পালমাসের বিপক্ষে বাম হাঁটুর লিগামেন্টে ইনজুরিতে পড়ে প্রায় দুই মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন এই সুপারস্টার। তবে মেসিকে ছাড়াই ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি আর্জেন্টিনার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জেভিয়ার মাচেরানো। তিনি বলেন, ‘মেসিকে ছাড়াই ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদি।’
বাছাইপর্বে অপর ম্যাচে উরুগুয়ে বলিভিয়া সফরে যাবে আর কলম্বিয়া নিজেদের মাঠে পেরুর মুখোমুখি হবে। ইনজুরির কারনে কলম্বিয়ার হয়ে খেলতে পারছেন না রিয়াল মাদ্রিদ তারকা হামেস রদ্রিগেজ। এর অর্থ হচ্ছে ফর্মহীনতায় থাকা চেলসি স্ট্রাইকার রাদামেল ফ্যালকাওয়ের ওপর আক্রমণভাগের পুরো দায়িত্ব পড়ছে। অন্যদিকে ইনজুরির কারণে বার্সা তারকা লুইস সুয়ারেজ মাঠের বাইরে থাকায় উরুগুয়ের আক্রমণটাও অনেকটা কাভানিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post