দুই এতিম কন্যার বিয়ে দিলেন ডিসি, প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়েছেন উপহার



স্টাফ রিপোর্টারঃ মাতা-পিতাহীন দুই কন্যা শাকিলা (২১) ও নয়নতারা (২৩) খুঁজে পেল নিজেদের নতুন ঠিকানা। ওই দুই তরুণী গত দুই বছর আগে সিলেট সমাজসেবা পরিচালিত শিশু পরিবার থেকে মৌলভীবাজারে এসেছে। এখানে বেড়ে উঠে শাকিলা ড্রাইভিং ও নয়নতারা ট্রেইলারিং শিখছে। তাঁরা কেউই কখনো ভাবেনি তাদের নতুন ঠিকানার সন্ধান পাবে। অবশেষে তাদের সেই চিন্তার ভাবনা দূর হলো। আর এটির দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রচেষ্টায় সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বেড়ে উঠা ওই দুই কন্যা ‘শাকিলা ও নয়নতারার’ জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অভিভাবকহীন দুই কন্যার বিয়ের অভিভাবক জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান নিজেই।

দুই কন্যা শাকিলা ইসলাম ও নয়নতারা। ওদের মধ্যে শাকিলা ইসলামের বিয়ে হয় আল আমিনের সঙ্গে এবং নয়নতারার বিয়ে হয় মোঃ সাব্বিরের সঙ্গে। বর আল আমিন টিউবওয়েল মিস্ত্রি এবং সাব্বির সিএনজিচালিত আটোরিকশার চালক। এই দুই নবদম্পতিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক লাখ করে মোট দুই লক্ষ টাকা উপহার দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৭ অক্টোবর এই দুই দম্পতির জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। বিয়েতে প্রায় তিনশ মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সহ সরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

আগের রাত ২৬ অক্টোবর বুধবার তাদের জমকালো গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সাবরিনা রহমানসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তারা।

জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সহকারী ম্যানেজার একেএম মিজানুর রহমান জানান, ‘এরা আমার মেয়ের মত। তাদের বিয়েতে যাতে কোনো ধরনের কমতি না হয়, এজন্য সব আয়োজন করা হয়। দুই মেয়ের অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক অতিথির জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। জেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এ বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আমার দুই কন্যার জন্য দোয়া করেছেন।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, একজন পিতা তাঁর কন্যাদের যেভাবে বিয়ে দেন, তেমনি এ কন্যাদের পিতা হিসেবে একজন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মতো আমরা তাদের বিয়ে দিচ্ছি। সকল নিয়ম, সকল আনুষ্ঠানিকতায় এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হল। কোন জিনিসের কমতি ছিলনা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুই নবদম্পতিকে এক লক্ষ করে মোট দুই লক্ষ টাকা উপহার দেওয়া হয়েছে। তাদের খোঁজখবর সবসময় নেয়া হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post