কুলাউড়ায় খাসি ও গারো জনগোষ্ঠীদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা



নিউজ ডেস্কঃ মৌলভীবাজার জেলাধীন কুলাউড়ায় প্রভাবশালী কর্তৃক খাসি ও গারো জনগোষ্ঠীদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র ও শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার আয়োজনে উপজেলা শাখার সভাপতি প্রশান্ত কৈরির সভাপতিত্বে এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়।

সভায় বক্তব্য রাখেন, শ্রীচুক যুব গারো সংগঠনের উপদেষ্টা সামুয়েল জোসেফ, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এস কে দাশ সুমন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জলি পাল, সাংবাদিক’ কবি জাবেদ ভূঁইয়া, ছাত্র ইউনিয়ন জেলা কমিটির সভাপতি পিনাক দেব, খাসি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক লেনচার জয়, ছাত্র ইউনিয়ন শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ স্বাধীন দেব, সমাজকর্মী প্রিতম দাশ ও মিঠুন উড়াং প্রমূখ।

এসময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২৫ আগস্ট থেকে খাসি ও গারো সম্প্রদায়ের উপর দফায় দফায় হামলা, নির্যাতন চালাচ্ছে সন্ত্রাসী রফিক বাহিনীর সদস্যরা। সেখানে পান পুঞ্জির ৩৫ হাজার গাছ কর্তন করা হয়েছে। আমরা রফিক বাহিনীর এই হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারের কাছে আমরা দাবী জানাই, যাতে এই রফিক বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়।



অপরদিকে কুলাউড়া উপজেলায় খাসিয়া কর্তৃক সামাজিক বনায়নে হামলা, উপকারভোগীদের মামলা দিয়ে হয়রানি ও জবরদখলকৃত সংরক্ষিত বনাঞ্চল দখলমুক্ত করার দাবিতে ৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্থানীয় হায়দরগঞ্জবাজারে বিক্ষোভ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে কর্মধা ইউনিয়নের সর্বস্তরের নাগরিক।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, খাসিয়াদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র পানজুমের নামে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের লাখ লাখ লাখ টাকায় ভূমি বেচাকেনা চলছে। অবিলম্বে এসব বন্ধ না করলে বাঁশমহাল, গাছমহাল কিংবা বন্যপ্রাণী কিছুই থাকবে না বনে। এমনকি সংরক্ষিত বনাঞ্চল বলতে আর কিছু থাকবে না। খাসিয়ারা গোটা বনাঞ্চল তাদের দখলে নিতে চায়। নিজেরা পান কেটে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের নামে মামলা দেয়। সংশ্লিষ্ট বনকর্মকর্তার বদলী দাবি করে। খাসিয়াদের নেতৃত্বদানকারী বাবলী তালাং, সিলভেস্টার পাঠাং ও হেনরি তালাং টু খাসিয়াকে আটক করলে সংরক্ষিত বন জবরদখল বন্ধ হয়ে যাবে।

বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সৃষ্ট বিরোধ নিয়ে প্রশাসন উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে একটি দিক নির্দেশনা দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে গোটা সিলেট বিভাগ থেকে ভাড়া করা লোক দিয়ে মানববন্ধন করে নিরীহ উপকারভোগীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে। খাসিয়ারা এখনও সামাজিক বনায়নের সৃজিত বাগানের সেই জায়গা তাদের জবরদখলে রেখেছে। উপকারভোগীরা সরকারের সামাজিক বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে। কিন্তু প্রশাসন সেই সরকারি কাজে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে হয়রানি করে।

এছাড়া অবিলম্বে মুরইছড়া ইকোপার্ক বাস্তবায়নেরও জোর দাবি জানান বক্তারা। মুরইছড়া ইকোপার্ক বাস্তবায়ন হলে এবং খাসিয়াদের জবরদখল বন্ধ হলে সরকার বাঁশমহাল, গাছমহাল থেকে বছরে কোটি কোটি রাজস্ব আয় হবে।

মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন হারিছ আলী, সৈয়দ আব্দুল বাছিত, ইছরাইল আলী, মো. রফিক আলী, আছকির আলী, ফারুক মিয়া।

Post a Comment

Previous Post Next Post