প্রেসক্লাবের প্রথম নারী সভাপতি ফরিদা, সম্পাদক ইলিয়াস



নিউজ ডেস্কঃ জাতীয় প্রেসক্লাব নির্বাচনে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী সভাপতি নির্বাচিত হলেন ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি পেয়েছেন ৫৮১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল উদ্দিন সবুজ পেয়েছেন ৩৯৫ ভোট। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ৫৬৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ইলিয়াস খান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওমর ফারুক পেয়েছে ৩৯৩ ভোট।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়।

২০২১-২২ মেয়াদে ব্যবস্থাপনা কমিটি অন্য সদস্যরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে হাসান হাফিজ (৪১৩), সহ-সভাপতি রেজোয়ানুল হক রাজা (৬১৫), যুগ্ম সম্পাদক পদে মাঈনুল আলম (৫৭৭, কোষাধ্যক্ষ পদে শাহেদ চৌধুরী (৭০৬)।

সদস্যরা হলেন- আইয়ুব ভূঁইয়া, জাহিদুজ্জামান ফারুক, ভানুরঞ্জন চক্রবর্তী, রহমান মুস্তাফিজ, রেজানুর রহমান, শাহনাজ সিদ্দিকী সোমা, কাজী রওনক হোসেন, শাহনাজ বেগম পলি ও বখতিয়ার রানা।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল এক হাজার ১৫১টি।

প্রসঙ্গত, ফরিদা ইয়াসমিন জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রথম নির্বাচিত নারী সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের উপদেষ্টা। এছাড়া বাংলাদেশ জার্নালিস্ট ফোরাম অ্যাগেনিস্ট ট্রাফিকিংয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। মিডিয়াতে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করায় ২০১৭ সালের ৭ মে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টটেটিভ থেকে বিশেষ কংগ্রেশনার রিকোগনিশন এবং নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট অফিস থেকে পেয়েছেন ‘কংগ্রেসনাল স্পেশাল সার্টিফিকেট’।

ফরিদা ইয়াসমিন ১৯৬৩ সালের ১ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্ম নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দৌলতকান্দি গ্রামে। তার বাবার নাম সাখাওয়াৎ হোসেন ভুঁইয়া এবং মায়ের নাম জাহানারা হোসেন। পাঁচ বোন এবং চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। শিবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন ফরিদা ইয়াসমিন।

পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগ থেকে ১৯৯০ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

ফরিদা ইয়াসমিন ১৯৮৯ সালে বাংলার বাণী পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতার চাকরি শুরু করেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকাল থেকেই তিনি বিভিন্ন সাপ্তাহিক ম্যগাজিনে নিয়মিত কাজ করতেন। তিনি মুক্তকণ্ঠেও কাজ করেছেন।

১৯৯৯ সাল থেকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় কর্মরত। ২০০১ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য হন ফরিদা ইয়াসমিন। ২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তিনি সাউথ এশিয়ান ওমেনস মিডিয়া ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক এবং এ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ২০১৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন ফরিদা।

তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ভাষা আন্দোলন ও নারী (২০০৫), উজ্জ্বল নারীর মুখোমুখি (২০০৫) ও ইতিহাসের আয়নায় বঙ্গবন্ধু (২০১৭)। তিনি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পদক, উইমেন লিড দ্য নেশন পুরস্কার ও জাতীয় প্রেস ক্লাব লেখক সম্মাননা লাভ করেন।

ফরিদা ইয়াসমিনের স্বামী বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম। এ দম্পতির এক ছেলে মাহির আবরার এবং এক কন্যা নুজহাত পূর্ণতা।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post