প্রেমের প্রস্তাবের রাজী না হওয়ায় স্কুল ছাত্রীকে মারধর করলো দুই সন্তানের জনক !

বিশেষ প্রতিনিধিঃ প্রেমের প্রস্তাবের রাজী না হওয়ায় কুলাউড়ার একটি স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে (১৬) পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় সিএনজি অটোরিক্সা থেকে নামিয়ে মারধর করেছে দুই সন্তানের জনক।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলার সদর ইউনিয়নের জনতাবাজার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
এঘটনায় জাহির আহমদ চৌধুরী (৩৩)কে অভিযুক্ত করে কুলাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েটির মা। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত জাহির কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের শংকরপুর এলাকার মৃত সামছুদ্দিন চৌধুরীর ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দুই সন্তানের জনক জাহির ওই স্কুল ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব ও উত্যেক্ত করে আসছিলো। গত মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে স্কুলে প্রবেশের সময় জাহির পেছন থেকে ডাক দেয় ওই ছাত্রীকে। এসময় ভয়ে ওই ছাত্রী দৌঁড়ে স্কুলের ভিতর গিয়ে শিক্ষকদের বিষয়টি জানায়। ওইদিন পরীক্ষা শেষে ছাত্রীর মা ও ভাই তাকে স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে বিষয়টি জাহিরের বড় ভাইকে জানান ছাত্রীর মা।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ি থেকে সহপাঠিসহ সিএনজি অটোরিক্সাযোগে স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলো ওই ছাত্রী। সদর ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় জাহির মোটরসাইকেলযোগে এসে তাদের বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সাটির পথরোধ করে।
গাড়ি থেকে ছাত্রীটিকে রাস্তায় নামিয়ে উত্যেক্তের বিষয়টি তাঁর পরিবারে কেনো জানানো হলো বলেই মারধর করতে থাকে জাহির। এক পর্যায়ে ছাত্রীর পেটে পা দিয়ে লাথি দিতে থাকে। এ সময় ছাত্রীর চিৎকারে আশেপাশের স্থানীয়রা ছুঁটে এলে জাহির সেখান থেকে সটকে যায়। স্থানীয়দের সহযোগীতায় গুরুতর আহত ওই ছাত্রিকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে কুলাউড়া থানা পুলিশ জাহিরকে আটকের জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। এর আগেই জাহির এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন মোবাইলে বলেন, জাহির দুই সন্তানের জনক। মঙ্গলবার জাহির ওই ছাত্রিকে স্কুলের গেটের সামনে উত্যেক্ত করেছিলো। পরে বিষয়টির তার অভিভাবককে জানানো হয়। এর জেরে বুধবার স্কুলে আসার সময় জাহির ছাত্রীকে মারধর করেছে। বিষয়টি ইউএনও ও অফিসার ইনচার্জকে তাৎক্ষণিক অবগত করা হয় এবং ছাত্রীর মা জাহিরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিয়েছেন।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এঘটনায় মেয়েটির মা একটি অভিযোগ থানায় দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত জাহিরকে ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।’
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক আহত ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে এবং স্কুলের ফান্ড থেকে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,অভিযুক্ত জাহিরকে দ্রুত আটক ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছি লিখিতভাবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post