মৌলভীবাজারে অস্বাভাবিক দামে পণ্য বিক্রি, জরিমানা করায় লাঞ্চিত !


নিউজ ডেস্কঃ দেশি পণ্যে বিদেশি ট্যাগ, অস্বাভাবিক দামে পণ্য বিক্রি, বিদেশি পণ্যে ইচ্ছেমতো দাম বসিয়ে বিক্রি করা এমন সব অভিযোগে জরিমানা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে জেলা ভোক্তাঅধিকারের দলকে লাঞ্ছিত করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, নিয়মিত ভেজাল বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) মৌলভীবাজার জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারীর পরিচালকের নেতৃত্বে ভেজাল বিরোধী অভিযানে গেলে সেন্টাল রোডের ব্যবসায়ীরা জেলা ভোক্তা অধিকারের পরিচালককে লাঞ্ছিত করে জিম্মি করে রাখে।

পরে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে থাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে অভিযান শুরু করলে শহরের কোর্ট রোডে রাজমহলে ইফতার সামগ্রীতে পোকা থাকায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর সেন্টাল রোডের একটি কাপড়ের দোকানে গিয়ে বিদেশি প্যন্টের দাম ২৪০০ টাকা দেখে কাগজপত্র দেখতে চান ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা। পরে কাগজপত্রে ধরা পরে এটি দেশি প্যান্ট এবং দাম ৭শ’। তাই এই দোকানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এরপর সেন্টার রোডে এমবি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে পণ্যের অতিরিক্ত দাম, নিজেদের মত দাম নির্ধারণের অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং এরপর তা আদায় করেন। এরপর বিলাস ডিপার্টমেন্টে গিয়ে পণ্যের অতিরিক্ত দাম, বিদেশি পণ্যের দাম নিজেদের মত করে নির্ধান, দেশি পণ্যকে বিদেশি ব্র্যান্ড নাম দিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ করলে বিলাস কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানায় এবং এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে আশে-পাশের ব্যবসায়ীরা এক হয়ে জেলা ভুক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল-আমিনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে পাশের একটি দোকানে জিম্মি করে রাখে। এ সময় আশে পাশের ব্যবসায়ীরা দোকান পাঠ বন্ধ করে রাস্তায় অবস্থান নেয়, পরে পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, যখন তখন ভোক্তা অধিকারের অভিযানের কারণে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। তাদের দাবি তাদেরকে না জানিয়ে অভিযান করা যাবে না।

বিলাশ ডিপার্টমেন্টের স্বত্বাধিকারী সুমন আহমদ জানান, সারা বছর জেলা ভোক্তা অধিকার ঘুমিয়ে থাকে কিন্তু যখন ২০ রমজান আসে তখন জমজমাট ব্যবসার টাইমে তারা অভিযান পরিচালনা করে ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটায়।

মৌলভীবাজার জেলা বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন জানান, কোনও ধরণের লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেনি বরং আমরা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উত্তেজিত ব্যবসায়ীদের হাত থেকে উনাকে নিরাপদ স্থানে রেখেছি।

এই ব্যবসায়ী নেতা অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা ভোক্তা অধিকার যখন তখন অভিযান পরিচালনা করে ইচ্ছেমত জরিমানা করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত।

জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক আল-আমিন জানান, পণ্যের অতিরিক্ত দাম, বিদেশি পণ্যে নিজেদের মত করে দাম বসানো এবং পণ্যের গায়ে থাকা দামকে টেম্পারিং করে নিজেদের মত বসানোর অভিযোগে অভিযান চালানো হয় । কিন্তু তারা আমাদের লাঞ্ছিত করে সরকারি কাজে বাধা দেয়।

মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম জানান, ভেজাল বিরোধী অভিযানে গেলে ব্যবসায়ীরা থাকে লাঞ্ছিত করে এবং জিম্মি করে রাখে পরে আমরা গিয়ে থাকে উদ্ধার করে নিয়ে আছি।

Post a Comment

Previous Post Next Post