কুলাউড়ায় অন্তঃসত্ত্বা নারীর লাশ উদ্ধার


বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে শাহানারা বেগম ওরফে শানাই (৩০) নামে ৮ মাসের অন্তঃস্বত্তা নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কটারকোনা গ্রাম থেকে স্বামী মনফর আলীর বাড়ি থেকে শানাইয়ের লাশ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত ৮টার দিকে উদ্ধার করা হয়। ওই গৃহবধু একই গ্রামের মসুদ আলীর মেয়ে। মনফর ও শানাই দম্পতির ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দশ বছর আগে শাহানারা বেগমের বিয়ে হয় একই গ্রামের মুজফফর আলীর ছেলে মনফর আলীর সাথে। বর্তমানে শাহানারা (শানাই) ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

বুধবার রাতে শানাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর অবস্থা অবনতি হওয়ায় সকালে স্বামী মনফর আলী প্রথমে তাঁকে কমলগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৌলভীবাজার হাসপাতালে প্রেরণ করেন সেখানকার চিকিৎসক। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালেও তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন শানাইকে। সিলেটে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে দুপুর ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান গৃহবধূর স্বামী মনফর আলী। পথিমধ্য থেকে শানাইকে বাড়িতে নিয়ে আসেন মনফর আলী।

তবে গৃহবধূর পিতার পরিবারের সন্দেহ সৃষ্টি হলে পুলিশ রাত ৮টার দিকে মনফর আলীর বাড়ি থেকে শাহানারার লাশ উদ্ধার করে কুলাউড়া থানায় নিয়ে আসে।

গৃহবধুর ভাই বদরুল ইসলাম জানান, দুপুরে জানতে পারি আমার বোন মারা গেছেন। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। এর আগে আমার বোন অসুস্থ হলেও কেউ আমাদেরকে জানায়নি। মৌলভীবাজার থেকে সিলেট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেটাও জানায়নি কেউ। আমার বোনের স্বামী বোনকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। এছাড়াও সে আরেকটি বিয়ে করেছে আমার বোনের অনুমতি ছাড়া। এ ব্যাপারে আমরা থানায় অভিযোগ করবো।

থানায় উপস্থিত শাহানারার স্বামী মনফর আলী বলেন, বুধবার রাতে রান্না করার সময় গরমে শাহানারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতে তাঁর শ্বাস কষ্ট বাড়তে থাকে। সকালে তাঁকে কমলগঞ্জ এবং পরে মৌলভীবাজারে নিয়ে গেলে সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সিলেট যাওয়ার পথে আমার স্ত্রী মারা যায়।

এদিকে মনফর আলী দুই বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীর ঘরে ৬ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে।

কুলাউড়া থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক কানাই লাল চক্রবর্তী বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে সন্দেহ প্রকাশ করলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে গৃহবধূর মুখে কয়েকটা চিহ্ন দেখা গেছে। তাই ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠাবো। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারন জানা যাবে। শাহানারা বেগমের পিতার পরিবার থেকে কেউ অভিযোগ দিলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post