গুহায় আটকা ফুটবল দল, উদ্ধারে লাগতে পারে কয়েক মাস

গুহায় আটকা ফুটবল দল, উদ্ধারে লাগতে পারে কয়েক মাস


অনলাইন ডেস্কঃ থাইল্যান্ডে একটি গুহায় আটকে পড়া ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচকে জীবিত পাওয়া গেলেও, উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসতে কয়েক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে- বলছে সেদেশের সেনাবাহিনী।

চিয়াং রাই প্রদেশের পাহাড়ি গুহাটির ভেতর এমনভাবে পানি ঢুকে পড়েছে যে তাদের সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার পথটি পুরোপুরি ডুবে গেছে। আর ১৩ জনের ফুটবল দলটি সেই গুহার মধ্যে একটি কার্নিশের মতো শুকনো খাঁজে বসে আছে। নয় দিন নিখোঁজ থাকার পর দলটিকে সোমবার খুঁজে পায় ব্রিটিশ উদ্ধারকারী ডুবুরিদের একটি দল।

উদ্ধারকর্মীরা ও সেনাবাহিনী বলছে, দলটি এমন জায়গায় আটকা পড়ে আছে যে গুহার বাইরে আসতে হলে তাদের ডুবুরির মতো পানির নিচ দিয়ে সাঁতরানো শিখতে হবে, অথবা কয়েক মাস গুহার মধ্যেই অপেক্ষা করতে হবে- যতদিন পানি নেমে না যায়। সেনাবাহিনী বলছে, তাদেরকে হয়তো আগামী চার মাস ধরে বাইরে থেকে খাবার পাঠাতে হবে।

উদ্ধারকারীরা এখন জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন, কিভাবে ক্রমাগত বাড়তে থাকা পানি অতিক্রম করে দলটির কাছে খাবার ও অন্যান্য সাহায্য পৌঁছে দেয়া যায়। গুহার ভেতরে বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইন বসানোর চেষ্টাও করা হচ্ছে- যাতে এই কিশোররা তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারে, বলছিলেন চিয়াং রাইয়ের গভর্নর নারোংসাক ওসোত্থানাকন।

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচ থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই প্রদেশের একটি গুহায় প্রবেশের পর নিখোঁজ হয়। তাদের উদ্ধারের জন্য ত্রাণ কাজে যোগ দিতে আসা দুজন ব্রিটিশ ডুবুরি সোমবার রাতে তাদের খুঁজে পান। 

থাই নৌবাহিনীর বিশেষ দল আটকেপড়া দলটির সাথে উদ্ধারকারীদের প্রথম যোগাযোগের মুহূর্তের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছে। টর্চের আলোয় দেখা যায় ওই কিশোররা গুহার মধ্যে একটি কার্নিসের মতো জায়গায় বসে আছে। তারা ডুবুরিদের জানায় যে ১৩ জনের সবাই সেখানে আছে এবং তারা খুবই ক্ষুধার্ত।

তারা জানতে চায়, কখন তারা এখান থেকে যেতে পারবে। ডুবুরিরা তাদের জানান, তাদের অপেক্ষা করতে হবে, আরো লোক সেখানে আসবে। তখন একজন কিশোর বলে, ‘ঠিক আছে, কাল দেখা হবে।’
এর আগে গুহার প্রবেশ পথে তাদের সাইকেল পাওয়া গিয়েছিলো। এরপর উদ্ধারকারী দল প্রথম খুঁজে পায় তাদের পায়ের জুতা এবং ব্যাগ। ২৪ জুন প্রবল বৃষ্টির পানিতে গুহার মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। প্রবল বৃষ্টিপাতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে থাকে তখন পানি তোলার পাম্প বসানো হয়, রোবট ব্যবহার করা হয়।

এরপর তারা পায়ের ছাপ আবিষ্কার করে কিন্তু ছেলেদের কোন চিহ্ন পায়নি। যেহেতু বৃষ্টি অব্যাহত ছিল তাই তারা গুহায় ঢোকার অন্য রাস্তা খুঁজতে থাকেন। উদ্ধারকারীদের রীতিমত সময়ের সাথে যুদ্ধ করতে হয় যাতে করে ভিতরে পানির উচ্চতা বেড়ে না যায়। কিন্তু গুহায় ঢোকার প্রধান প্রবেশ পথটি বৃষ্টির কারণে একেবারে প্রবেশের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

এরপর খোঁজা শুরু হয় একটা চিমনির। গুহার উত্তর দিকে একটা প্রাকৃতিক চিমনি আবিষ্কার করা হয়। ২৯ জুন গুহার ভিতরে বন্যার পানি কমতে শুরু করে। উদ্ধার-কর্মীদের এটাই সুযোগ করে দেয় ভিতরে ঢোকার, আশা বাড়তে থাকে। সোমবার রাতে খবর আসে, তাদের সবাইকে জীবিত এবং নিরাপদ অবস্থায় পাওয়া গেছে। 

এই খবরে, অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলো আনন্দে উল্লাস প্রকাশ করেছে। এখন চলছে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা। আর সেজন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন স্বজনেরা।

Post a Comment

Previous Post Next Post