বড়লেখায় নিখোঁজের ১০দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার

বড়লেখায় নিখোঁজের ১০দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার
বড়লেখা প্রতিনিধি:  মৌলভীবাজারের বড়লেখায় নিখোঁজের ১০দিন পর স্কুলছাত্র আব্দুল্লাহ হাসানের (১৫) গলিত অবস্থায় ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর এলাকার আরব আলীর নির্জন টিলার পাদদেশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ লাশ নিয়ে থানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় পুলিশ। এর আগে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সারওয়ার আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) আবু ইউসুফ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার (২৮ জানুয়ারি) বেলা দুটার দিকে দু’জন নারী ওই টিলা থেকে রেমা সংগ্রহ করতে গেলে সেখানে প্রচণ্ড দুর্গন্ধে ভয় পেয়ে ফিরে আসেন। পরে তারা বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে জানালে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে লাশ উদ্ধার করে। লাশটি ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়েছিল। মাথার খুলি এক স্থানে। বিচ্ছিন্ন একটি হাত শরীর থেকে দূরে পড়েছিল। ঘটনাস্থল আব্দুল্লাহ হাসানের বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আব্দুল্লাহ হাসান নিখোঁজ হয়। নিহত আব্দুল্লাহ উপজেলার মোহাম্মদনগর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে এবং সিলেটের দক্ষিণ সুরমা মনির আহমদ একাডেমীর নবম শ্রেণির ছাত্র। নিখোঁজ হওয়ার পরদিন ১৯ জানুয়ারি (শুক্রবার) আব্দুল্লাহর মা নাজমা ইয়াসমিন নিজে বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ১৮ জানুয়ারি বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে খেলাধুলার জন্য আব্দুল্লাহ হাসান বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর সে আর বাড়িতে ফিরেনি। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও তাঁকে খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। পরদিন (১৯ জানুয়ারি) বড়লেখা থানায় জিডি করা হয়েছে।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান স্কুলছাত্রের লাশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিখোঁজের পর হাসানের মা জিডি করেছিলেন। এরপর থেকে আমরাও তাকে খোঁজছিলাম। বিকেলে স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে সেখানে যাই। লাশের মাথা ও হাত বিচ্ছিন্ন। মনে হচ্ছে কাটা। শরীরের মাংস অনেকটাই ঝরে গেছে। লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।’

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) আবু ইউছুফ বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লাশটি গলিত। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে নিখোঁজের প্রথম দিনই হয়ত মেরে ফেলা হয়েছে। নিখোঁজের জিডির পর থেকে আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছিলাম। বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তদন্তের পর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’

Post a Comment

Previous Post Next Post