খাদিজা হত্যাচেষ্টায় বদরুলের বিচার শুরু

খাদিজা হত্যাচেষ্টায় বদরুলের বিচার শুরু
নিউজ ডেস্কঃ সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে হত্যাচেষ্টা মামলায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা (বর্তমানে বহিষ্কৃত) বদরুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সিলেট অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এ অভিযোগ গঠন করে আগামী ৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে আলোচিত এই মামলার বিচারকাজ শুরু হলো।

এপিপি অ্যাডভোকেট মো. মাহফুজুর রহমান জানান, আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরার আদালতে অভিযোগ গঠন নিয়ে দীর্ঘ শুনানি শেষে বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাদিজার ওপর হামলার পর মামলা হওয়ার এক মাস পাঁচ দিনের মাথায় মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার উপপরিদর্শক হারুনুর রশিদ গত ৮ নভেম্বর ফৌজধারী কার্যবিধি ৩২৪/২০৭ ও ৩২৬ ধারায় বদরুলকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। ১৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রের শুনানি শেষে তা গৃহীত হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে বদরুল আলম। হামলার পরপরই বদরুলকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে শিক্ষার্থীরা।
  
খাদিজাকে বদরুলের কোপানোর ভিডিওচিত্র মুঠোফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। বদরুলের দ্রæত বিচারের দাবিতে গত প্রায় এক মাস সিলেটসহ সারা দেশে প্রতিবাদী নানা কর্মসূচি পালিত হয়।

অভিযুক্ত বদরুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মনিজ্ঞাতি গ্রামে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী (অনিয়মিত) ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বদরুলকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

গত ৪ অক্টোবর এ ঘটনায় মহানগর পুলিশের শাহপারান থানায় মামলা দায়ের করেন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস। দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে সরকারের উচ্চ মহল থেকেও বদরুলের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করে শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দেয়া হয়।

খাদিজাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রামে খাদিজার বাড়ি। তার বাবা মাসুক মিয়া সৌদিপ্রবাসী।

স্কয়ার হাসপাতালে ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ১৩ অক্টোবর খাদিজার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়। খাদিজার অবস্থা এখন উন্নতির পথে। সরকারের পক্ষ থেকে খাদিজার চিকিৎসার ব্যয় বহন করা হচ্ছে।

গত ২৮ নভেম্বর খাদিজাকে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে সাভারের সিআরপিতে ফিজিওথেরাপি দেয়ার জন্য হস্তান্তর করা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post