নভেম্বরেই দিতে হবে আয়কর বিবরণী

নভেম্বরেই দিতে হবে আয়কর বিবরণী
অনলাইন ডেস্কঃ সময় মাত্র আর এক মাস। নভেম্বরের মধ্যেই দিতে হবে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন। সময় আর বাড়ছে না। সুতরাং, এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।
আয়কর বিবরণী দেওয়ার আগে জেনে নিন এর নানা দিক। জেনে নিন কী কী লাগবে আয়কর বিবরণী তৈরি করতে হবে। গোল্ডেন বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর ধরে নানাভাবে আয়করের খুঁটিনাটি জানিয়ে আসছে। আসুন, জেনে নিই আয়কর বিবরণীর কিছু দিক।
বিবরণী না দিলে জরিমানা: কোনো করদাতা আয়কর অধ্যাদেশের ৭৫ ধারা অনুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৭৩ ধারা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ এবং ৭৩-এ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব সুদ আরোপযোগ্য হবে। তবে করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করতে পারবেন উপকর কমিশনারের কাছে। এ ক্ষেত্রে যে সময় দেওয়া হবে, তার মধ্যে রিটার্ন দাখিল করলে জরিমানা আরোপিত হবে না, তবে অতিরিক্ত সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ দিতে হবে।
আয়কর বিবরণী কারা দেবেন: কোনো ব্যক্তি করদাতার আয় যদি বছরে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হয়, তবে তাঁকে রিটার্ন দিতে হবে। নারী এবং ৬৫ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সের পুরুষ করদাতার আয় যদি বছরে ৩ লাখ টাকার বেশি, প্রতিবন্ধী করদাতার আয় যদি বছরে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার বেশি হয়, তাহলে ওই করদাতাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
এর বাইরে আয়ের পরিমাণ যা-ই হোক না কেন, অবশ্যই তাঁদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে:
(ক) যদি আয় বছরে করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করে;
(খ) আয় বছরের পূর্ববর্তী তিন বছরের যেকোনো বছর করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে থাকে বা তার আয় করযোগ্য হয়ে থাকে;
(গ) করদাতা যদি—
১. কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার কর্মচারী হন;
২. কোনো ফার্মের অংশীদার হন;
৩. সরকার অথবা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের বা প্রচলিত কোনো আইন, আদেশ বা দলিলের মাধ্যমে গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের কর্মচারী হয়ে যদি বছরের যেকোনো সময় ১৬ হাজার টাকা মূল বেতন পেয়ে থাকেন;
(ঘ) করদাতার আয় কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত হারে যদি করযোগ্য হয়ে থাকে;
(ঙ) যদি আয় বছরের কোনো এক সময়ে নিম্নবর্ণিত শর্তের যেকোনোটি করদাতার জন্য প্রযোজ্য হয়—
১. মোটরগাড়ির মালিকানা থাকা (মোটরগাড়ি বলতে জিপ বা মাইক্রোবাসকেও বোঝাবে);
২. মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১-এর অধীন নিবন্ধিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ থাকা;
৩. কোনো সিটি করপোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হতে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে কোনো ব্যবসা বা পেশা পরিচালনা;
৪. চিকিৎসক, দন্তচিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার অথবা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার নিবন্ধন থাকা;
৫. আয়কর পেশাজীবী হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিবন্ধন থাকা;
৬. কোনো বণিক বা শিল্পবিষয়ক চেম্বার বা ব্যবসায়িক সংঘ বা সংস্থার সদস্যপদ থাকা;
৭. কোনো পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের কোনো পদে বা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়া;
৮. কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কোনো স্থানীয় সরকারে কোনো টেন্ডারে অংশগ্রহণ করা;
৯. কোনো কোম্পানির বা কোনো গ্রুপ অব কোম্পানিজের পরিচালনা পর্ষদে থাকা;
এলাকাভেদে ন্যূনতম আয়: করযোগ্য আয় না হলেও এবার ন্যূনতম কর দিতে হবে। তবে তা নির্ধারিত হবে এলাকাভেদে। যেমন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ৫ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ৪ হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ৩ হাজার টাকা।
ন্যূনতম আয়করের এ বিধানের ফলে একজন করদাতার আয় যেকোনো স্থানেই অর্জিত হোক না কেন, তিনি যেখানে অবস্থান করবেন, তার সে অবস্থানের ভিত্তিতেই ন্যূনতম করের হার নির্ধারিত হবে। তবে কোনো করদাতা যদি একই আয় বছরে একাধিক স্থানে অবস্থান করে থাকেন, তাহলে যে স্থানে তিনি সবচেয়ে বেশি সময় অবস্থান করেছেন, সে অবস্থানের জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম কর হার প্রযোজ্য হবে।
আবার ব্যবসা আয়ের ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার মুখ্য স্থানই ন্যূনতম করের জন্য একজন করদাতার অবস্থানস্থল হিসেবে বিবেচিত হবে। করদাতা অনিবাসী হলে বাংলাদেশে তিনি যে ঠিকানা ব্যবহার করেন, সে ঠিকানাই তাঁর অবস্থানস্থল হিসেবে বিবেচিত হবে।
সূত্র: গোল্ডেনবিজনেসবিডিডটকম

Post a Comment

Previous Post Next Post