বীমার টাকার জন্য নিজের হাত-পা কাটলেন নারী!

বীমার টাকার জন্য নিজের হাত-পা কাটলেন নারী!
অনলাইন ডেস্কঃ বীমা সংস্থার কাছে থেকে দুর্ঘটনা বীমার দেড় লক্ষ ডলার পাওয়ার আশায় নিজের হাত-পা কেটে ফেলেছেন ভিয়েতনামের কেং প্রদেশের লাই থি এন (৩০) নামের এক নারী। আড়াই হাজার ডলারের বিনিময়ে এই ঘটনায় লাইকে সাহায্য করেছেন তারই এক বন্ধু।

জানা গেছে, ভিয়েতনামের কেং প্রদেশে স্বামী ও দুই সন্তানের সঙ্গে থাকেন লাই থি এন।বীমা সংস্থার কাছ থেকে কীভাবে ওই বিপুল অর্থ দাবি করা যায় তা নিয়ে দুর্ঘটনার একটি ছক কষেন তিনি। তাকে এই কাজে সাহায্য করার জন্য এক বন্ধুকেও সঙ্গে নেন। প্রথমে তারা দু’জনে হ্যানয়ের একটি ফাঁকা রেল স্টেশনে যান। রেললাইনের ধারে লাইনের এক হাত এবং একটি পা কাটেন তার বন্ধু ডোয়েন বেন। রক্তাক্ত অবস্থায় রেললাইনের ধারে বসে থাকেন লাই। ও দিকে ডোয়েন এই ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন। পুলিশও ঘটনাস্থলে আসে। তারপর লাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের কাছে ডোয়েন বলেন ট্রেনের ধাক্কায় হাত-পা কাটা পড়েছে তার বন্ধু লাইয়ের। হাসপাতালে নিয়ে এসে লাইয়ের কাটা হাত-পা জোড়া লাগানো হয়। কিন্তু কিছুদিন পরেই সংক্রমণের কারণে ফের তার হাত-পা বাদ দিতে হয়।

যতবারই লাইকে পুলিশ জিজ্ঞাসা করেছে, ততবারই তিনি বলেছেন পরিবারের সঙ্গে অশান্তি করে তিনি ওই স্টেশনে গিয়ে লাইন ধরে হাঁটছিলেন। তখনই ট্রেনের ধাক্কায় তার হাত-পা কাটা পড়ে। এক ব্যক্তির চোখে পড়ায় তিনিই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। পুলিশের কোথাও একটা সন্দেহ হয় লাই এবং ডোয়েনের কথায়। তারা ঘটনাস্থলে যান যেখানে লাই হাত-পা কাটা অবস্থায় পড়েছিলেন। পুলিশের ধারণা, এই ঘটনার জন্য লাই এমন একটা জায়গা বেছেছিলেন যাতে সেখান থেকে সহজেই অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় এবং পুলিশকেও সহজে খবর দেওয়া যায়। এক পুলিশ অফিসার জানান, খবর পেয়ে যখন তাঁরা ঘটনাস্থলে যান, হাত-পা কাটা সত্ত্বেও লাইকে নির্বিকার ভাবে বসে থাকতে দেখেন। তা ছাড়া বার বার পুলিশকে এটাকে দুর্ঘটনা বলে মামলা করার জন্য বলেছিলেন লাই।

সন্দেহের বশে ডোয়েনকে যখন পুলিশ আটক করে জেরা করে, পুরো ঘটনাটাই বলেন তিনি। বিমা সংস্থার কাছ থেকে কী ভাবে অত পরিমাণ টাকা দাবি করা যায়, কীভাবে এর জন্য পরিকল্পনা করা হয় সব কিছুই লাই তাকে বলে দিয়েছিলেন। এর জন্য ডোয়েন দেড় লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন লাইযের কাছ থেকে। এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নানা রকম প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। লাই ফ্যান নামে এক ব্যক্তি মন্তব্যে লিখেছেন, টাকা গেল, হাত-পা ও গেল, এখন জেলে যাও। কোনো লাভই হল না।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, ব্যবসায় লোকসান হওয়ার জন্য লাই হয়তো এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এ ধরনের প্রতারণার ব্যাপারে সে দেশে এখনও পর্যন্ত কোনো আইন তৈরি হয়নি। তাই লাই ও ডোয়েনের বিরুদ্ধে কী ধরনের মামলা করবে তা নিয়ে ভাবছে পুলিশ। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

Post a Comment

Previous Post Next Post