রাঙামাটিতে বিদেশি মুদ্রাসহ মায়ানমারের বৌদ্ধ ভিক্ষু আটক

রাঙামাটিতে বিদেশি মুদ্রাসহ মায়ানমারের বৌদ্ধ ভিক্ষু আটক
অনলাইন ডেস্কঃ মায়ানমারের নাগরিকত্বের পরিচয় গোপন রেখে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের পার্বত্যাঞ্চলে বসবাস করে আসছিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু উথয়েন চিং (৬৮)। আটককৃত ভিক্ষুর কাছ থেকে মায়ানমারের এক লাখ চল্লিশ হাজার মুদ্রা, বাংলাদেশি পাঁচ হাজার টাকাসহ মায়ানমারের নাগরিক সনদ, বাংলাদেশি জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট এবং বার্মিজ ভাষায় লিখিত বেশ কিছু বই উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানা গেছে, বৌদ্ধ ভিক্ষু দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ পাহাড়ি এলাকাবাসীর চোখে ধূলা দিয়ে বালুখালীস্থ শান্তিরত্ন বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় গুরুর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।সাম্প্রতিক সময়ে তার গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় এলাকাবাসী সেনাবাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করে। পরে জুড়াছড়ি সেনাজোনের একটি দল ঘটনাস্থলে শুক্রবার ভোরে শান্তিরত্ন বৌদ্ধ বিহারে অভিযান পরিচালনা করে ওই ভিক্ষুকে আটক করে।

পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে মায়ানমারের নাগরিক বলে স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তি অনুসারে তার রুম থেকে মায়ানমার ও বাংলাদেশের মুদ্রাসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আটক ভিক্ষু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে মিয়ানমারের নাগরিক বলে স্বীকার করেছে।

তিনি জানিয়েছেন, জনৈক ভিক্ষুর মাধ্যমে ২০০৭ সালে তিনি মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তিনিই এই ভিক্ষুকে রাঙামাটিতে নিয়ে এসে শান্তিরত্ন বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় গুরুর দায়িত্ব প্রদান করেন।
সেই ২০০৭ সাল থেকে তিনি শান্তিরত্ন বৌদ্ধ বিহারের বসবাস করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আমরা সকলেই এতোদিন জেনে আসছি যে, ভিক্ষুর বাড়ি বান্দরবানে। তিনি আমাদের কাছে তার আসল ঠিকানা গোপন করেছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওই বিহারের এক দায়িকা ভিক্ষুর নিকট মায়ানমারের মুদ্রাসহ বেশ কিছু কাগজপত্র দেখতে পেয়ে এলাকার কয়েকজনকে জানায়। তারা বিষয়টি সেনাবাহিনীকে অবহিত করে।
তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জুড়াছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাঙামাটি জেলা পুলিশের অপরাধ বিভাগের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদ উল্লাহ জানিয়েছেন, একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে আটক করা হয়েছে বলে জেনেছি।

তিনি জানান, ঘটনাটি যেহেতু সদর থানাধীন সেহেতু কোতয়ালী থানা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।

সূত্র বলছে, মায়ানমার থেকে সে দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে নিয়ে আসছে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ভান্তেদের একটি অংশ। এই অংশটির মাধ্যমেই গত বছর রাঙামাটির রাজস্থলী থেকে আটককৃত মায়ানামারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির শীর্ষ নেতা ড. রেনিন সো’সহ আরাকান আর্মির সদস্যদের নিয়ে রাঙামাটিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন দূর্গম এলাকায় নানা ধরনের ছদ্মবেশে বসবাস করার সুযোগ করে দেয়। চিকিৎসক, বৌদ্ধ ভান্তে, এনজিও কর্মীসহ নানা ধরনের ছদ্মবেশে মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছে। তাদেরই মাধ্যমে পাহাড়ে প্রবেশ করছে অবৈধ অস্ত্র।

রাঙামাটিতে আটককৃত মায়ানমারের আরাকান আর্মির নেতা মং অং থান গোয়ন্দা নজরদারির মাধ্যমে পুলিশের আটক হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিলো রাঙামাটির জনৈক ভান্তের সাথে কন্ট্রাক করে তিনি রাঙামাটিতে এসেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post