এস আলম সুমন, কুলাউড়া:
এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে পোনা মাছ শিকারী ও পাচারকারীদের দৌরাত্ম
বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই অবাধে পোনা নিধনের কারণে দেশের মৎস্য
ভান্ডারখ্যাত হাকালুকির মৎস্যসম্পদ হুমকির মুখে। প্রাশাসনের নীরবতা ও
স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় স্থানীয় অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীর সহায়তায়
পাচারকারীরা প্রতিদিনই দুই থেকে তিন মেট্রিক টন পোনা মাছ পাচার করে বিক্রি
করছে দেশের বিভিন্ন বাজারে। প্রশাসনের উদাসীনতায় দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে
পাচারকারীদের দৌরাত্ম।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিতে তলিয়ে গেছে হাকালুকির সবকটি জলমহাল। স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন দরিদ্র মৎস্যজীবিদেরকে দিয়ে হাওরে বেড়জাল, কারেন্ট জাল ও কাপড়ি জাল দিয়ে মাছ শিকার করান। এসব জালে আটকা পড়ছে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা। হাকালুকি হাওর থেকে পোনা মাছ শিকার করে রাত ১০টা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কুলাউড়া উপজেলার ভূকশীমইলের তেঘরী ঘাট ও জুড়ী উপজেলার কন্টিনালা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় শিকারীরা নিয়ে আসেন। এগুলো অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বড় বড় শহরের পাইকারদের কাছে নিলামে বিক্রী করেন। পাইকাররা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এসব পোনা পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যান মৌলভীবাজার সদর, হবিগঞ্জ ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে। বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২৩ সেন্টিমিটারের (৯ ইঞ্চি) চেয়ে কম মাপের শোল, রুই, কাতলা, মৃগেল, কালীবাউশ আইড় এবং বোয়ালসহ সবধরণের পোনা মাছ ধরা ও বিক্রি এবং বেড়জালসহ ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটারের কম ব্যাসার্ধের ফাঁকবিশিষ্ট জাল ব্যবহার সম্পূর্ণ আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু এসময় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় ও দারিদ্রতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় সিন্ডিকেটের ব্যবসায়ীরা তাদেরকে দিয়ে পোনা মাছ শিকার করান এমনটাই জানালেন হাওরতীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলার সাদিপুর জেলেপল্লীর বেশ কয়েকজন জেলে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিতে তলিয়ে গেছে হাকালুকির সবকটি জলমহাল। স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন দরিদ্র মৎস্যজীবিদেরকে দিয়ে হাওরে বেড়জাল, কারেন্ট জাল ও কাপড়ি জাল দিয়ে মাছ শিকার করান। এসব জালে আটকা পড়ছে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা। হাকালুকি হাওর থেকে পোনা মাছ শিকার করে রাত ১০টা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কুলাউড়া উপজেলার ভূকশীমইলের তেঘরী ঘাট ও জুড়ী উপজেলার কন্টিনালা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় শিকারীরা নিয়ে আসেন। এগুলো অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বড় বড় শহরের পাইকারদের কাছে নিলামে বিক্রী করেন। পাইকাররা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এসব পোনা পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যান মৌলভীবাজার সদর, হবিগঞ্জ ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে। বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২৩ সেন্টিমিটারের (৯ ইঞ্চি) চেয়ে কম মাপের শোল, রুই, কাতলা, মৃগেল, কালীবাউশ আইড় এবং বোয়ালসহ সবধরণের পোনা মাছ ধরা ও বিক্রি এবং বেড়জালসহ ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটারের কম ব্যাসার্ধের ফাঁকবিশিষ্ট জাল ব্যবহার সম্পূর্ণ আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু এসময় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় ও দারিদ্রতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় সিন্ডিকেটের ব্যবসায়ীরা তাদেরকে দিয়ে পোনা মাছ শিকার করান এমনটাই জানালেন হাওরতীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলার সাদিপুর জেলেপল্লীর বেশ কয়েকজন জেলে।
হাওরতীরবর্তী বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের আতাতে বর্ষাকালে প্রতিদিন রাতে ১০ টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত কুলাউড়া’র তেঘরীঘাটে ও জুড়ীর কন্টিনালা নদীর ব্রিজ সংলগ্ন পাড়ে “রাতের হাট” বসে। হাকালুকি থেকে শিকারীরা পোনা মাছ নিয়ে আসেন এই হাটে। প্রতিটি হাটে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাজারের পাইকারদের (পাচারকারী) কাছে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার পোনা নিলামে বিক্রী করেন। পাচারকারী ও ব্যবসায়ীরা স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের লোক হওয়ায় কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না। তারা আরও বলেন, পোনা মাছ শিকারে ব্যবহৃত কারেন্ট জাল ছাড়াও প্রায় দুইশতাধিক বেড় জাল রয়েছে কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায়। একেকটি বেড় জাল ৪ শ হাত থেকে তিন হাজার হাত পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এসব জালের মালিক ওইসকল প্রভাবশালীমহল। লোক দেখানো অভিযান ছাড়া প্রশাসন কার্যকরী কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় পোন মাছ নিধনের মূলহোতারা রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অবাধে পোনা নিধন বন্ধ হবে। প্রভাবশালীমহলের লোকদের নাম জানতে চাইলে তারা নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সুত্র জানায়,কুলাউড়া উপজেলায় ১০জনের একটি প্রভাবশালী সিন্ডকেট দল রয়েছে। তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে তেঘরিঘাট এলাকার “রাতের হাট”। তাদের অধীনে সাদিপুর ও মীরশংকর এলাকায় রয়েছে ১২টির মত বেড়জাল, বেশকয়েকটি হাটজাল (মাকড়সার জাল) ও ইঞ্জিনচালিত বড় নৌকা। এই সিন্ডকেটের ছত্রছায়ায় স্থানীয় জলে ছাড়াও রাজনগর উপজেলার বেশ কয়েকজন জেলে ও ব্যবসায়ী হাওর থেকে পোনা পাচারে সক্রিয় রয়েছে। সুত্র আরও জানায়, গতকাল বৃস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেট্রো- ন-১৮-৬৯০৬, ঢাকা মেট্রো- ন- ১৮-০৯৯৯ এই দুটি পিকআপ ভ্যানসহ মোট ৪টি গাড়িতে করে প্রায় ৭টন পোনা মাছ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের তথ্যমতে সরেজমিনে কুলাউড়া স্টেশন চৌমুহনী গিয়ে দেখা যায়, রাত সোয়া ১টা থেকে ১টা ৮মিনিট পর্যন্ত পোন মাছ বোঝাই চারটি পিকআপ ভ্যান বেপরোয়া গতিতে ওই এলাকা ক্রস করে মৌলভীবাজারের দিকে যাচ্ছে। এভাবেই প্রতি রাতেই প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে পোন মাছ নিয়ে যায় পাচারকারীরা।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্ত সুলতান
মাহমুদ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে পোনা মাছ ও জাল
জব্দ এবং জরিমানা করেছি। গভীর রাতে অভিযান পারিচালনা করা অনেকটাই দুঃসাধ্য
ব্যাপার। সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে সময়মত তিনটি ডিপার্টমেন্টকে একত্রিত
করা যায়না। বিশেষ করে পুলিশ ফোর্স সময়মতো পাওয়া যায়না। তবে কয়েকবার রাতে
অভিযানে নেমেছিলাম, কিন্তু পাচারকারীরা অভিযানের খবর পেয়ে সটকে পড়ে তাই
তাদেরকে ধরা যায়না।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহসিনা বেগম বলেন, ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে পোনাসহ আটক করে জরিমানা করা হয়েছে। পোনামাছ নিধনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহসিনা বেগম বলেন, ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে পোনাসহ আটক করে জরিমানা করা হয়েছে। পোনামাছ নিধনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।