কুলাউড়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত ৫ বর্তমান চেয়ারম্যানদের স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষনা

কুলাউড়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত ৫ বর্তমান চেয়ারম্যানদের স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষনা
নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়ার ৭ ইউনিয়নে আসন্ন ৩ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এ প্রার্থী তালিকায় স্থান হয়নি বিএনপির বর্তমান ৪ চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগের বর্তমান ১ চেয়ারম্যানসহ ত্যাগী নেতাদের। কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও ২নং ভুকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু বাদে বাকি সব বর্তমান চেয়ারম্যান বাদ পড়েছেন। ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করে মনোনয়ন বানিজ্যের মাধ্যমে প্রবাসীসহ কয়েক হাইব্রিড নেতাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করায় ফুঁসে উঠছেল তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। যার ফলে উভয় দলকেই নির্বাচনে কঠিন মাশুল দিতে হবে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের ৩ বারের নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক এক সময়ের তুখোঁড় ছাত্রনেতা অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহ্জাহানকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়া হয় বিগত নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফুর রহমানকে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক তুখোঁড় ছাত্রনেতা বদরুল ইসলাম বদরকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়া হয় কানাডা প্রবাসী সেলিম আহমদকে। জয়চন্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদকে বাদ দিয়ে আব্দুর রব মাহবুবকে দলের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে উপজেলার ১নং বরমচাল ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরানকে বাদ দিয়ে বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে বিগত নির্বাচনে মেম্বার পদে পরাজিত আব্দুল মোক্তাদির মোক্তারকে। ৪নং জয়চন্ডী ইউনিয়নের ২ বারের নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রদল নেতা কমর উদ্দিন আহমদ কমরুকে বাদ বিএনপির প্রার্থী করা হয় রুমেল খাঁনকে। ৮নং রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল জামালকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে প্রবাসী বিএনপি নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মুহিত সোহেলকে। ২৬ মার্চ শনিবার কেন্দ্রের পূর্বেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ৫ নং ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক মিয়াকে বাদ দিয়ে সাবেক ছাত্রনেতা বদরুল ইসলাম খানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
এদিকে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী ১নং বরমচাল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার দৃষ্টিতে সঠিক প্রার্থী বাছাই করা হয়নি। আমি দলকে ভালোবাসি, দলের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে আমি নির্বাচন করবো না। তবে দলের নীতিনির্ধারকরা নির্বাচনী এলাকা যাচাই না করে প্রার্থী নির্বাচন করায় ভোটে প্রভাব পড়তে পারে।
মনোনয়ন বঞ্চিত আরেক প্রার্থী ৪নং জয়চন্ডি ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি দুই গ্র“পের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং দলীয় ফরম পূরণ করে কুলাউড়া বিএনপির দুই গ্র“পের কাছে জমা দিয়েছি। কিন্তু উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দরা মোটা অংকের টাকা খেয়ে রুমেল খানকে কেন্দ্র থেকে দলীয় মনোনয়ন এনে দিয়েছেন। আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবো।
এছাড়া মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী নং রাউৎগাও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুল জলিল জামাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রদল ও যুবদল করেছি এখন বিএনপির রাজনীতি করছি। দলের অনেক আন্দোলনে আমি বাড়িতে পুলিশী যন্ত্রনায় ঘুমাতে পারিনি। কিন্তু দল আমাকে মূল্যায়ন করেনি। আমি টাকার রাজনীতির কাছে হেরে গেলাম। তবে ভোটের রাজনীতিতে আমার প্রতি জনগণের সমর্থন আছে। আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবো।

Post a Comment

Previous Post Next Post