শ্রীমঙ্গলে অবৈধ ভোজ্য তেলের বিশাল কারখানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত

শ্রীমঙ্গলে অবৈধ ভোজ্য তেলের বিশাল কারখানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ শ্রীমঙ্গলে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে অবৈধ ভোজ্য তেলের কারখানা সন্ধান পাওয়া গেছে। এর ভিতর থেকে বিপুল পরিমান দেশের বিভিন্ন ব্রান্ডের নামের ভোজ্য তেলের বোতল ও তেল উৎপাদনের বিভিন্ন প্রকারের মেশিনারিজ জব্দ করা হয়। ২৯ ফেব্রুয়ারী রোববার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ভ্রাম্যামান আদালত এ অভিযান চালায়। এসময় আদালত রোববার দুপুর ২ টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। জানাযায়, শ্রীমঙ্গল শহরের সদর ইউনিয়নের হবিগঞ্জ সড়কের পার্শ¦বর্তী শাহজীবাজার ব্রাক সেন্টার সংলগ্ন উত্তর-উত্তরসুর এলাকায় অবৈধ এই কারখানাটি বছরের পর বছর বিশাল কমযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসনসহ সকলের অজান্তে। এই কারখানায় ৭ টি ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের বিশাল তথ্যও পাওয়া গেছে। শ্রেষ্টা এন্টারপ্রাইজ(ট্রেড লাইসেন্স নং০৯৬৮৬ শ্রীমঙ্গল পৌরসভা) ও মেসার্স আরএস এডিবয়েল কোং (ট্রেড লাইসেন্স নং০৯৬৮৫ শ্রীমঙ্গল পৌরসভা)র নামের আড়ালে ভয়াবহ এই জালিয়াতি করে যাচ্ছে অবৈধ এই প্রতিষ্ঠানের মালিক আনন্দ দত্ত। রোববার দুপুর থেকে রাত ৮ পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘন্টা ব্যাপী এই অভিযানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল হক এর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সদস্য ও র‌্যাব এর সদস্যরা অংশ নেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার দুপুর ২ টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল হক এর নির্দেশে শ্রীমঙ্গল উত্তর-উত্তরসুর এলাকায় অবস্থিত অবৈধ্য ভোজ্য তেল তৈরির ঐ কারখানায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। ১২ কক্ষের সেই কারখানায় রয়েছে ৪ টি ইউনিট, প্রতিটি ইউনিটে রয়েছে ভোজ্য তেল তৈরির সকল ধরনের যন্ত্রাংশ। বিভিন্ন কক্ষে স্তুপাকারে রয়েছে তেলের খালি বোতল ও বিভিন্ন ব্রান্ডের তেলের অব্যবহৃত লেভেল। এর মধ্যে রয়েছে নুরজাহান, জ্যাসমিন, ফুলকলি, পিওর সুপার ওয়েল, শক্তি সুপার ওয়েল, উটমার্কা ও সূর্যমুখি ওয়েল কোম্পানীর তেলের লেবেল। কারখানার রেজিস্টার খাতায় মেসার্স আক্তার মিয়া, মেসার্স কদ্বর আলী এন্ড সন্স, মেসার্স জ্যোতিকা স্টোর, মেসার্স সৃজন স্টোর, ফেঞ্চগঞ্জের মেসার্স আলী এন্টার প্রাইজ, মৌলভীবাজারের মেসার্স জয়গুরু ভান্ডার নিয়মিত ভ্যোজ্য তৈল সংগ্রহকারী হিসেবে লিপিবদ্ধ পাওয়া যায়। খালি বোতল, লেভেল ছাড়াও বিভিন্ন কক্ষে ড্রামের মধ্যে খোলা তেলে ঠাসা রয়েছে। যেগুলো সয়াবিন তেল হিসেবে অবৈধভাবে প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন এলাকার পাইকারী ও খুচরা দোকানে বাজারজাত করা হতো। শ্রীমঙ্গলের বাইরেও যে বাজারজাত করা হয় তার তথ্য-প্রমান পাওয়া যায় অফিস কক্ষে রক্ষিত পণ্যের ওর্ডারবহি ও ক্রেতাদের রশিদ থেকে। ১২টি কক্ষের একটি কক্ষ অফিস হিসেবে ব্যবহুত হওয়ায় সেখানে বেশ কয়েকটি রেজিষ্টার খাতা ও মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের নথি খোঁজে পাওয়া যায়। যেখানে বিভিন্ন দোকানসহ পণ্য অর্ডারকারীদের নাম লিপিবদ্ধ দেখা যায়। অভিযান পরিচালনাকালীন কারখানায় কর্মরত ৫ শ্রমিককে আটক করা হয়। আটককৃত শ্রমিকরা হল সিলেটের ওসমানীনগর থানার শংকরপাশা গ্রামের জমির মিয়ার ছেলে রুমন মিয়া, ভোলা জেলার কুতবা এলাকার আহম্মদ আলীর ছেলে আওলাদ হোসেন, ওসমানীনগর থানার শংকর পাশা গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে সুমন মিয়া, একই এলাকার আ: সোবহানের ছেলে কবির আহমদ, শ্রীমঙ্গল বিষামনি এলাকার উরফান মিয়ার ছেলে আশিকুর রহমান। কারখানার মালিক শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগর এলাকার মৃত সুধাংশ দত্তের ছেলে আনন্দকে ও আটক করে পুলিশ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল হক জানান, অবৈধ এই তেলগুলো বোতলজাত এবং ড্রামে করে শ্রীমঙ্গল সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় এর জন্য পাঠনো হতো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে এই অভিযানে এই তৈল গুলো জব্দ করা হয় এবং তা নষ্ট করা করাহয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post