ধর্মপাশার সুনই জলমহাল অবৈধ দখলে

ধর্মপাশার সুনই জলমহাল অবৈধ দখলে
নিউজ ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই জলমহালে চলতি ১৪২২ বঙ্গাব্দের বার্ষিক ইজরামূল্য পরিশোধ করেও প্রভাবশালীদের হুমকি ও ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে স্থানীয় সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ২১ সদস্য গত এক সপ্তাহ ধরে প্রাণের ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বড় ভাই মোশারফ হোসেন মাসুদ ও তার অনুসারীরা সমিতির সদস্যদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকাছাড়া করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যদের পক্ষ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই নদী জলমহালটি জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন। এর আয়তন ২২১ একর ১৮ শতক। ১৪১৮ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪২১ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত এটি জেলা প্রশাসন থেকে খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা চলে আসছিল। এ জলমহালটি নিয়ে পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গুলুয়া মৎস্যজীবী সমিতির পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেন সমিতির লোকজন। ১৪২২ বঙ্গাব্দের বেশ কয়েক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে উপজেলার সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে বাৎসরিক ২৪ লাখ ২৪ হাজার ৬৬১ টাকা ইজারা মূল্যে ছয় বছরের জন্য এটি ইজারা দেয়া হয়। সুনই মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যরা ২ ফেব্র“য়ারি ইজারামূল্য পরিশোধ করেন। ৬ ফেব্র“য়ারি সকালে জলমহালে সুনই সমিতির সদস্যরা গেলে সেখানে থেকে মোশারফ হোসেন মাসুদ ও তার অনুসারী সাইদুর রহমান চৌধুরী, আবদুছ ছালাম ও দেবন সাহার নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জলমহালের বৈধ ইজারাদারদের জোরপূর্বক সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। এলকাবাসীর অভিযোগ, এটি অবৈধভাবে দখল ও জেলেদের দিয়ে মাছ শিকারের প্রধান নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বড় ভাই মোশারফ হোসেন মাসুদ। তার নিয়োজিত লোকজন পাঁচ মাস ধরে ওই জলমহাল থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ হাতিয়ে নিচ্ছেন। সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি চন্দন বর্মণ ও সাধারণ সম্পাদক ঝন্টু বর্মণ জানান, স্থানীয় এমপির বড় ভাই মাসুদ ও তার সহযোগী লোকজন পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও বারহাট্টা উপজেলা থেকে ক্যাডার বাহিনী এনে অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িঘরে এসে প্রতিদিনই পরিবারের লোকজনদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা জলমহালে গেলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও ওরা ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে। ওদের ভয়ে স্ত্রী সন্তান ফেলে আমরা সমিতির ২১ পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এক সপ্তাহ ধরে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে আছি। সংসদ সদস্য রতনের বড় ভাই মোশারফ হোসেন মাসুদ বলেন, আমি ক্ষমতার প্রভাব খাটাইনি। সুনই মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগটিও সঠিক নয়। ওই জলমহালটি গুলুয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যরা ইজারা পেয়েছেন। ইউএনও মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যরা এ জলমহালটির বৈধ ইজারাদার।

Post a Comment

Previous Post Next Post