রোগীদের দুর্ভোগ; কুলাউড়া হাসপাতালের জেনারেটর বিকল

নাজমুল ইসলাম: কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটিই জেনারেটর নষ্ট। একটি ৪ মাস ধরে ও অন্যটির ব্যাটারি নষ্ট থাকায় সেগুলো বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। জেনারেটরগুলো মেরামতের জন্য বেশ কয়েকবার কৃর্তপক্ষের কাছে আবেদন করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এগুলো অকেজো পড়ে রয়েছে। জেনারেটর নষ্ট থাকায় বিদ্যুত গেলেই অন্ধকার ও গরমে চরম দুর্ভোগের শিকার হন রোগীরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দির্ঘদিনের পুরোনো জেনারেটরগুলোর একটি এ বছরের ২৮ মে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে পড়ে ও অন্যটির দির্ঘদিন থেকে ব্যাটারী নষ্ট থাকায় সেটিও অকেজো। এরপর থেকে মেরামতের অভাবে গত ৪ মাস ধরে একটি জেনারেটর বিকল পড়ে আছে। গত মাসের স্বাস্থ্য কমিটির সভায় কুলাউড়া পৌর মেয়রকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনারেটরগুলো মেরামতের অনুরোধ জানালে তিনি একটি জেনারেটর মেরামতের আশ্বাস দেন। সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জেনারেটর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রাতে বিদ্যুত চলে গেলে পুরো হাসপাতালটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। তখন জরুরী বিভাগের রোগীদের চার্জার লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। অন্ধকারে এবং তীব্র গরমে ওয়ার্ডের রোগীরা বিপাকে পড়েন। জরুরি বিভাগে ও আবাসিক ওয়ার্ডের বিদ্যুত ব্যবস্থার জন্য জেনারেটরটি হাসপাতালে সিড়ির নিচে ছোট্ট একটি জীর্ণ স্থানে যন্ত্রাংশ খুলা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় সেখানকার ৬টি ফ্যান ও বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক বাল্ব নষ্ট। জানা যায়, ফ্যানগুলো গত ২৭ সেপ্টেম্বর নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও সেগুলো মেরামত করা হয়নি। এতে রোগীদের দুর্ভোগ আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। ওয়ার্ডের বেশ কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনরা ক্ষোভের সাথে বলেন হাসপাতাল কৃর্তপক্ষের অব্যবস্থাপনার জন্য দিন দিন তাদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক অঞ্জন মনি কর অচিন্ত বলেন, পৌর মেয়র ঈদের আগে একজন মেকানিক পাঠালে সে জেনারেটরটি চেক করার জন্য যন্ত্রাংশগুলো খুলে এবং এটি মেরামতের জন্য কত টাকা লাগবে সেটা মেয়রের সাথে আলাপ করে অনুমতি স্বাপেক্ষে ঈদের পরে কাজ করবে বলে জানায়। কিন্তু ঈদের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সে আসেনি। কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মহিউদ্দিনের সাথে মুঠোফনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, হাসপাতালের জেনারেটর দুটি মেরামতের জন্য গত ২১ জুন তারিখে সিলেট নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে লিখিতভাবে জানিয়েছি ও গত মাসে জেলা স্বাস্থ্য কমিটির সভায় বিষয়টি উত্তাপন করেছি তবে এব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমিটির মিটিংয়ে একটি জেনারেটর মেরামতের দায়িত্ব নেন পৌর মেয়র সাহেব এবং এটির মেরামতের জন্য একজন মেকানিক পাঠিয়েছিলেন শুনেছি। আবাসিক ওয়ার্ডের ফ্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফ্যানগুলো রিপিয়ারিংয়ের ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা ডিপার্টমেন্টাল হেড ইঞ্জিনিয়ার মো. হানিফকে জানিয়েছি। আজ-কালের মধ্যে আবার বিষয়টির খবর নিবো। কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ হাসপাতালের একটি জেনারেটর মেরামত করে দেয়ার আশ্বাস প্রদানের কথা নিশ্চিত করে বলেন, জেনারেটরটি মেরামতের জন্য কত টাকা লাগবে সেটা জানানোর জন্য একজন মেকানিককে দায়িত্ব দিয়েছি। সে আমাকে এখনো জানায়নি। জানালে আমি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডা. সত্যকাম চক্রবর্তীর মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটরগুলো বিকল থাকার ব্যাপারে আমি জেনেছি। কিন্তু পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় সেগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছেনা।

Post a Comment

Previous Post Next Post