অনলাইন ডেস্কঃ অস্ট্রিয়া ও জার্মানিমুখী অভিবাসীদের ঢল যেন থামছেই না। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশিসহ এক দিনেই হাঙ্গেরি সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে ১০ হাজার মানুষ। হাঙ্গেরি থেকে অস্ট্রিয়াগামী ট্রেনে তাদের তুলে দিতে কাজ করছে হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষ। এদিকে, জার্মান সরকার এ বছর আট লাখ অভিবাসীকে আশ্রয় দেবে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমগুলো। কনকনে ঠাণ্ডায় রাত কাটানোর পর ভোরবেলা মানুষগুলোর সাহায্যে এগিয়ে আসে হাঙ্গেরির পুলিশ। তাদেরকে বাসে করে নিয়ে আসা হয় রেলস্টেশনে, ট্রেনে করে তারা যাবে অস্ট্রিয়ায়, সেখান থেকে যাবে জার্মানি। শনিবার অস্ট্রিয়া পর্যন্ত বাস সার্ভিস চালু করা হলেও রোববার অভিবাসীদের অস্ট্রিয়াগামী ট্রেনে তুলে দিতে বাস সরবরাহ করে হাঙ্গেরি সরকার। ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ এসব মানুষের চোখে মুখে দেখা যায় কিছুটা প্রশান্তির ছাপ। তাদেরকে খাবার পানি ও শীতের পোশাকও সরবরাহ করা হয়। তাদের একজন বলেন, 'আমি জার্মানি যেতে চাই, কারণ আমি বাঁচতে চাই। সিরিয়ার অবস্থা ভয়াবহ। আমি আর আইএস, আল-কায়েদার ভয়াবহতা দেখতে চাই না।' হাজারও মানুষের এ ঢল যেন থামবার নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শরণার্থী সমস্যা এরকম ভয়াবহ কখনও হয়নি। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের এ ঢল সামলাতে হিমশিম খেলেও হাসিমুখেই তা করছে অস্ট্রিয়া ও জার্মানি কর্তৃপক্ষ। শনিবার হাজারও মানুষকে স্বাগত জানিয়েছে দেশ দুটি। যাদের মধ্যে রয়েছে অনেক বাংলাদশিও। এ পরিস্থিতিতে এক সম্মেলনে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট জানিয়েছেন, তার সরকার সিরিয়া ও ইরাক থেকে শরণার্থী গ্রহণ করবে এবং আর্থিক সহায়তা দেবে। অভিবাসীদের এ প্রকট সমস্যায় অভিবাসীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে সমাবেশ হয়েছে প্যারিসের রিপাবলিক স্কয়ারে। প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে ফ্রান্স সরকারকে এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে। তারা বলেন, 'এসব মানুষকে সাহায্য করা প্রয়োজন যাতে তারা তাদের পরিবার ও সন্তান নিয়ে বেচে থাকতে পারে। তারা ফ্রান্সেও আসছে নিরাপদ আশ্রয়ের আশায়। আমাদের উচিত এদের সাহায্য করা, এদের তাড়িয়ে দেয়া নয়। আমরা চাই- যুদ্ধ বন্ধ হোক। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যুদ্ধই এই সমস্যার মূল কারণ। এরকম ভয়াবহ অবস্থা দেখাটাও কষ্টদায়ক।' এদিকে, জার্মানি সরকার দক্ষিণপূর্ব ইউরোপের ৭৫ হাজার আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন নাকচ করে দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আগত শরণার্থীদের বৈধভাবে আশ্রয় দেয়ার কথা ভাবছে বলে খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম।