![]() |
ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত |
অনলাইন ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যের ৫৬তম জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলে রাত ১০টা (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা) পর্যন্ত। দেশের প্রায় ৫০ হাজার কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটার সংখ্যা ছিলো প্রায় ৫ কোটি। ভোটগণনা শেষে স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার জনমত জরিপে প্রধান দুই দলের কাছাকাছি অবস্থান জটিল করে তুলেছে এই নির্বাচনের হিসেব-নিকেশ। এদিকে, এ নির্বাচনে প্রধান তিন দলের মনোনয়নে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১২ জন প্রার্থী লড়ছেন এমপি পদে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন রুশনারা আলী, বঙ্গবন্ধুর নাতনী টিউলিপ সিদ্দিক ও খ্যাতনামা কিংস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রূপা হক। নির্বাচনে ডেভিড ক্যামরনের কনজারভেটিভ পার্টি ও এড মিলিব্যান্ডের লেবার পার্টির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে জনমত জরিপগুলোতে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে। তবে কোনো দলেরই একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবার সম্ভাবনা কম। বৃহস্পতিবার সকালে ভোটকেন্দ্র খোলার পরপরই সহধর্মিনীকে সঙ্গে নিয়ে ইংল্যান্ডের ডোনকাস্টারে নিজ এলাকায় ভোট দেন বিরোধী দলীয় নেতা এড মিলিব্যান্ড। প্রায় একই সময় লন্ডনের একটি কেন্দ্রে সস্ত্রীক ভোট দিতে আসেন ডেভিড ক্যামেরন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটেনের বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রগুলোতে বাড়তে থাকে জনসমাগম। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে হাউজ অব কমন্সের ৬৫০জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। এরমধ্যে ৫৩৩ আসনের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে ইংল্যান্ডের জনগণ। বাকি ৫৯টি আসনে স্কটল্যান্ড, ৪০টিতে ওয়েলস এবং ১৮টি আসনে নর্দান আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। এর পাশাপাশি ২শ' ৭৯ জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনেও নেয়া হচ্ছে ভোট। এবারের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী দিয়েছে ৬শ' ৪৮ আসনে। লেবার ও লিবারেল ডেমোক্র্যাটস উভয় দলের প্রার্থী সংখ্যা ৬শ' ৩১ জন করে। এছাড়া অভিবাসন বিরোধী ইউকে ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টি ও গ্রিন পার্টির প্রার্থী সংখ্যা যথাক্রমে ৬শ' ২৪ ও ৫শ' ৭৩। প্রাদেশিক দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি স্কটল্যান্ডে ও প্লেইড কামরি দল ওয়েলসের আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর আগে বুধবার বিকেলে নির্বাচনী প্রচারণার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির আগে ডেভিড ক্যামেরন ভোটারদের কাছে কনজারভেটিভ পার্টিকে ভোট দেয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন, লেবার পার্টির সঙ্গে এসএনপির জোট যুক্তরাজ্যের সর্বনাশ ঘটাবে। অন্যদিকে, এড মিলিব্যান্ড কনজারভেটিভ পার্টিকে ধনবানদের স্বার্থ রক্ষাকারী দল হিসেবে আখ্যা দিয়ে, সব শ্রেণির মানুষের কল্যাণে লেবার পার্টিকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। এছাড়া, কোন দলেরই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া কথা উল্লেখ করে, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টির নেতা নিক ক্লেগ, কনজারভেটিভ বা লেবার পার্টির সঙ্গে একটি স্থিতিশীল জোট সরকার গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, নির্বাচন পূর্ববর্তী বিভিন্ন সংস্থার পরিচালিত জনমত জরিপে দেখা গেছে, প্রধান দুই দল কনজারভেটিভ ও লেবারের কাছাকাছি অবস্থান রয়েছে। জরিপের তথ্য আরও বলছে, এ নির্বাচনে কোন দলই একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে ক্যামেরন বা মিলিব্যান্ডের দল কাদেরকে সঙ্গে সরকার গঠন করবে সেটাই এখন আলোচনার মূল বিষয়। ২০১০ সালের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৩শ' ৭ আসনে জয় পায় কনজারভেটিভ পার্টি। আর লেবার পার্টি পেয়েছিল ২শ' ৫৮ আসন। ওই নির্বাচনে ৫৭ আসনে জয় পাওয়া লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে ব্রিটেনের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে প্রথম জোট সরকার গঠন করে কনজারভেটিভ দল।