![]() |
ভাস্কর নভেরা আহমেদ চলে গেলেন |
নিউজ ডেস্কঃ একুশে পদকপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম রূপকার ভাস্কর নভেরা আহমেদ আর নেই। তিনি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ফ্রান্সের প্যারিসে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। বুধবার রাতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নভেরা আহমেদ ১৯৩০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ভাস্কর্য শিল্পের অন্যতম অগ্রদূত তিনি। তিনি ভাস্কর হামিদুর রহমানের সঙ্গে জাতীয় শহীদ মিনারের প্রাথমিক নকশা প্রণয়নে অংশগ্রহণ করছিলেন। দীর্ঘ অন্তরাল জীবনের পর ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি প্যারিসে তার রেট্রোসপেকটিভ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯৭-এ বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। কর্মসূত্রে নভেরার বাবা সৈয়দ আহমেদ কর্মরত ছিলেন সুন্দরবন অঞ্চলে। নভেরার জন্ম সুন্দরবনে। চাচা আদর করে নাম রাখেন নভেরা। পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামের আসকার দিঘির উত্তরপাড়া। চাকরিসূত্রে নভেরার বাবা পরে কলকাতায় ছিলেন। নভেরার শৈশব কেটেছে কলকাতায়। নভেরা কলকাতার লরেটায় স্কুল জীবন কাটিয়েছেন। স্কুল জীবনেই তিনি ভাস্কর্য গড়তেন। ১৯৪৭-এ ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারত ভাগ হয়ে যাওয়ার পর তারা পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লায় চলে আসেন। এ সময় নভেরা কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন। বাবার অবসর গ্রহণের পর তারা সবাই আদি নিবাস চট্টগ্রামে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫০ সালে তিনি লন্ডনে যান। লন্ডনে তখন তার মেজ বোন শরীফা আলম বিবিসির একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন এবং বিবিসির বাংলা অনুষ্ঠানের দায়িত্বে¡ ছিলেন নাজির আহমেদ। নাজির আহমেদের ছোট ভাই হামিদুর রাহমান তখন ঢাকা আর্ট কলেজে পড়তেন। কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্রদের একজন তিনি। তার সহপাঠী ছিলেন আমিনুল ইসলাম। হামিদুর রহমান যখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, তখন নাজির আহমেদ তাকে নিয়ে গিয়ে প্যারিসের বোজআর্ট স্কুলে ভর্তি করে দেন। কিন্তু হামিদ প্যারিসে থাকতে পারেননি, তিনি লন্ডনে ফিরে ভাইয়ের ফ্ল্যাটেই উঠলেন। আর তখনই নভেরার সঙ্গে পরিচয় হামিদের। লন্ডনে হামিদুর রহমান সেন্ট্রাল স্কুল অব আর্টে ভর্তি হলেন। নভেরা ১৯৫১ সালে ক্যাম্বারওয়েল স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফট সেরন্যাশনাল ডিপ্লোমা ইন ডিজাইনের মডেলিং ও স্কাল্পচার কোর্সে ভর্তি হলেন। ১৯৫৫ সালে নভেরা কোর্স শেষ করে ডিপ্লোমা পেলেন। ১৯৫৪ সালের জানুয়ারি মাসে নভেরা আহমেদ ও হামিদুর রহমান একসঙ্গে ফ্লোরেন্সে যান।