আবারো সক্রিয় প্রতারকরা চক্র

আবারো সক্রিয় প্রতারকরা চক্র
আবারো সক্রিয় প্রতারকরা চক্র
সাবধান! কুলাউড়ায় আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে বোরকা পরা নারী প্রতারকরা। নানা কৌশলে তারা ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুটে নিয়ে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রাহ্মণবাজারে বোরকা পরা নারীদের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন বাজারের দুই ব্যবসায়ী। অন্যদিকে মোবাইল ফোনে দুই লাখ টাকা লটারিতে পাওয়ার লাভে ১০ হাজার টাকা বিকাশে ছেড়ে টাকার শোকে কাতরাচ্ছেন এক যুবক। এছাড়া চোখে ধুলা দিয়ে আসল সোনা দেখিয়ে নকল সোনা বিক্রি, ক্রেতা সেজে বিভিন্ন শপিং মল ও দোকানে ঢুকে ক্যাশ বাক্স লুট, নানা অজুহাতে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঢুকে মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার, মূল্যবান জিনিসপত্র চুরিসহ নানা অপকর্ম করে চলেছে ওই বোরকা পরা নারী প্রতারকের চক্রটি। আসল সোনা দেখিয়ে নকল সোনা বিক্রি : ব্রাহ্মণবাজারের পান দোকান ব্যবসায়ী শেফুল মীরের বাড়িতে ১৯ মে বোরকা পরিহিত এক ভদ্র মহিলা এসে এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল বিক্রি করবে বলে বাড়ির মহিলাদের জানায়। পরে শেফুল মীরসহ বাড়ির মহিলারা স্বর্ণের কানের দুল আসল না নকল তা জানার জন্য স্থানীয় স্বর্ণকারের দোকানে গেলে স্বর্ণকার তা পরীক্ষা করে সঠিক বলে জানায়। পরে বাড়িতে এসে ওই বোরকা পরা মহিলার সঙ্গে দামদর ঠিক করে একপর্যায়ে ১৮ হাজার টাকার স্বর্ণের দুল ১১ হাজার টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত হয় এবং বিক্রেতা রাজি হয়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে টাকা কম হয়ে যাচ্ছে অজুহাত দেখিয়ে ওই মহিলা স্বর্ণের দুলটি বিক্রি করবে না বলে তার কাছে নিয়ে নেয় এবং দুই মিনিট পর আবার বলে বাড়িতে আমার বোন অসুস্থ টাকার জরুরি দরকার আরো ৫০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়ে দেন এই বলে কানের দুলটি তাদের হাতে তুলে দেয়। আর ক্রেতারাও কম টাকায় ভালো জিনিস পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে জিনিস নিয়ে টাকা দিয়ে বোরকা পরা মহিলাকে বিদায় করে দেন। কিন্তু চতুর বোরকা পরা মহিলা আসল স্বর্ণের কানের দুল রেখে তাদের নকল ইমিটেশনের দুল দিয়ে বোকা বানিয়ে টাকা নিয়ে যায়। বোরকা পরে ক্রেতা সেজে ক্যাশ লুট : এবার বোরকা পরে দুই প্রতারক মহিলা হানা দেয় ব্রাহ্মণবাজারের বেঙ্গল ফুডসের বকস ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। ২২ মে বোরকা পরা দুই মহিলা ক্রেতা সেজে দোকানে ঢুকে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম জিজ্ঞেস করছিল। এ সময় দোকানদার দোকানে একা থাকায় মহিলা দুজন ভাগ হয়ে একজন সামনে ও একজন পেছনে গিয়ে নানা জিনিসপত্র দেখতে থাকে। দোকানের মালিক একজনকে দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে এ সুযোগে অন্য মহিলা দোকানের ক্যাশ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা কৌশলে নিয়ে নেয়। একপর্যায়ে কোনো জিনিস পছন্দ হয়নি বলে মহিলারা দোকান থেকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর দোকানের মালিক ক্যাশ খুলে দেখেন কোনো টাকা নেই। তিনি বুঝতে পারেন ওই মহিলারা তাকে প্রতারিত করেছে কিন্তু এর আগেই তারা বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। লটারি লাভের আশায় ১০ হাজার টাকা গচ্ছা লটারি লাভের আশায় নিজের পুঁজি খুইয়ে এখন মানুষের কাছে বিলাপ করছেন এক যুবক। ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শনিবাজার এলাকার বাসিন্দা স্থানীয় কৃষি ব্যাংকের দারোয়ান রাজেশ কানুর কাছে ২০ মে দুপুরে ০১৭৬৩৫৮৩৩৩০ নাম্বার থেকে একটি ফোন আসে-আপনি খুব সৌভাগ্যবান ব্যক্তি, আপনার মোবাইল নাম্বারে দুই লাখ টাকা লটারি লেগেছে। আপনি এই নাম্বারে দফায় দফায় ৫০ হাজার টাকা যদি বিকাশ করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার মোবাইলে ফিরতি ম্যাসেজে দুই লাখ টাকা পেয়ে যাবেন। আপনি যত বিকাশ করবেন ততই আপনি ম্যাসেজের মাধ্যমে লটারির টাকা দ্বিগুণ পাবেন। এরপর রাজেশ কাউকে না বলে বড়লোক হওয়ার আশায় স্থানীয় ফ্লেক্সিলোডের দোকানে এসে প্রথম ধাপেই ওই নাম্বারে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়। এরপর আবার যখন টাকা পাঠাতে যাবে তখন দোকানকার আগের ১০ হাজার টাকা দিতে বললে সে জানায় আগে ছাড় ন, যত ছাড়ব ততই ম্যাসেজে ফিরতি টাকা পেয়ে যাব। সেখান থেকে আপনাকে দিয়ে দেব। এ কথা শোনার পর দোকানদার বুঝতে পারেন সে লটারির দালালদের পাল্লায় পড়ছে। সব বুঝতে পেরে যখন ওই নাম্বারে ফোন দেয়, তখন নাম্বারটি এর আগেই বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দোকানদারের ১০ হাজার টাকা দিতে না পেরে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি থেকে ১টি ছাগল বিক্রি করে কিছু টাকা দেয় এবং বন্ডসই দিয়ে বাকি টাকা ফেরত দেবে বলে সেখান থেকে ছাড়া পায়।

Post a Comment

Previous Post Next Post