আদিবাসী তরুনী খুনের মূল হত্যাকারী গ্রেফতার

আদিবাসী তরুনী খুনের মূল হত্যাকারী গ্রেফতার
আদিবাসী তরুনী খুনের মূল হত্যাকারী গ্রেফতার
নিউজ ডেস্কঃ বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর আদিবাসী তরুনী মোনালিসা নংপ্রট (১৮) খুনের প্রধান আসামী আজিজুর রহমান ওরফে ফেটলাকে পুলিশ বুধবার গভীর রাতে গ্রেফতার করেছে। বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মাসুদর রহমান অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত আজিজুর রহমান উপজেলার দক্ষিন শাহবাজপুর ইউনিয়নের বোবারতল এলাকার ইউসুফ আলীর পুত্র। পুলিশ তাকে উপজেলার মুড়াউল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। সে ওই রাতে গোপনে সিলেট থেকে তার বাড়িতে আসছিল। বৃহস্পতিবার আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে সে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। হত্যাকান্ডের সাথে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে আজিজুর। দীর্ঘ স্বীকারোক্তিতে সে হত্যার ও হত্যা পরবর্তী ঘটনার বিবরণ দেয়। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে সে মোনালিসাকে হত্যা করে বলে জানায়। পুলিশ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি সকালে উপজেলার দক্ষিন শাহবাজপুর ইউনিয়নের বোবারতলের গান্ধাই পুঞ্জির মোনালিসা নংপ্রট জুমে পান কুড়াতে গেলে একই এলাকার আজিজুর রহমান তাকে জোরপূর্বক ধর্ষন করার চেষ্ঠা করে। কিন্তু ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে পুঞ্জির ৭০-৮০ ফুট নিচে নিয়ে সে মুনালিসাকে গলা কেটে হত্যা করে পাহাড়ে নীচে ফেলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে মোনালিসা নংপ্রটের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মোনালিসা নংপ্রটের ভাই জীবন নংপ্রট বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪/১৫ইং। 
যেভাবে হত্যা করা হয় মোনালিসাকে : চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি প্রতিদিনের মত পান জুমে কাজ করতে আসে আজিজুর রহমান ওরফে ফেটলা। কিন্তু এ দিন জুমের মালিক পান জুমে কাজ করা লাগবে না বলে তাকে জানায়। কাজ না থাকায় বাড়ি ফেরার পথে জুমের কাছে আসার পর সে দেখতে পায় নিহত মোনালিসা জুম থেকে পান কুড়াচ্ছে। তখন তার কু-দৃষ্টি পড়ে মোনালিসার উপর। তাৎক্ষণিক সে মোনালিসাকে পিছন থেকে জাপটে ধরে। এতে মোনালিসা বাধা দিলে সে মোনালিসার ঘাড়ে ও হাতে কামড় বসায়। মোনালিসাও পাল্টা নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে কামড় দেয় আজিজুর রহমানকে। এক পর্যায়ে মোনালিসাকে সে পুঞ্জির ৭০-৮০ ফুট নিছে নিয়ে যায় ধর্ষণ করতে। পুঞ্জির নিছে নিয়ে ধর্ষণ করতে চেষ্ঠা করলে মোনালিসা তাদের নিজস্ব ভাষায় চিৎকার করলে আজিজুর রহমান তার হাতে থাকা দা দিয়ে মোনালিসার গলায় কুপ দিয়ে হত্যা করে মোনালিসাকে । হত্যার পর সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে সে তার বাড়ি থেকে পালিয়ে আত্মগোপন করে। দীর্ঘ প্রায় ৩ মাস পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মাসুদর রহমান অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আজিজুর রহমান হত্যাকান্ডের সাথে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post