খাসিয়াদের আপত্তি; ঝিমাই চা-বাগানের সম্প্রসারণ কাজে ব্যাঘাত

খাসিয়াদের আপত্তি; ঝিমাই চা-বাগানের সম্প্রসারণ কাজে ব্যাঘাত
নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়ার ঝিমাই চা-বাগানে পরিপক্ব গাছ কাটতে খাসিয়াদের আপত্তির কারণে চা-বাগান সম্প্রসারণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে একদিকে সরকারের বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, অন্যদিকে সংশিস্নষ্ট চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ও খাসিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, চা-বাগান বন্দোবসত্দ চুক্তি অনুযায়ী সম্প্রতি চা-বাগান কর্তৃপৰ বাগান সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়। নতুন চা-গাছ লাগানোর লৰ্যে তারা বন্দোবসত্দ নেওয়া এলাকার ২০৯৬টি পরিপক্ব গাছ কাটার জন্য আবেদন করে সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়ে। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় নতুন চা লাগানোর স্বার্থে উলিস্নখিত গাছ কাটার অনুমতি দেয়। অনুমোদনকৃত গাছ কাটার লৰ্যে বন বিভাগের লোকজন গাছ চিহ্নিত করতে গেলে খাসিয়ারা তাদের বাধা দেয়। গাছ কাটার প্রতিবাদে কুলাউড়া শহরে বাপা ও খাসিয়ারা মানববন্ধন করে। ফলে কর্তনযোগ্য গাছ চিহ্নিতকরণ কার্যক্রম বাধাগ্রসত্দ হয়। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের চাপে ফেলার জন্য বাগানের রাসত্দা ব্যবহার করে খাসিয়াদের চলাচলে বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পৰের মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। খাসিয়াদের দাবি, গাছ কেটে ফেললে তাদের জীবন-জীবিকার প্রধান অবলম্বন পান চাষে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। অন্যদিকে বাগান কর্তৃপৰ জানায়, ৫০ বছরের বেশি বয়সী গাছগুলো প্রাকৃতিক কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চা-বাগান সম্প্রসারণের জন্য সরকারি রাজস্ব প্রদান করে এই গাছ কেটে নতুন চা লাগানো হবে। চা-বাগান সম্প্রসারিত এলাকায় নতুন করে প্রতি একরে ২০০টি ছায়াবৃৰ লাগানো হবে। তাছাড়া বড় গাছে পান চাষ করতে গেলে খাসিয়ারা গাছের মাথার অংশ কেটে পান চাষ করে। ছোট গাছে পান চাষ করলে রোদের জন্য গাছের মাথা কাটতে হয় না। কেদারপুর টি কোম্পানি লিমিটেড ১৯৬৮ সালে ৬৮৬ একরবিশিষ্ট ঝিমাই চা-বাগানটি বন্দোবসত্দ নেয়। বন্দোবসত্দ নেওয়ার পর ৩১০ একর ভূমিতে চা-গাছ লাগানো হয়েছে। বাকি ভূমির মধ্যে প্রায় ৫ একরে রয়েছে বাগানের অফিস, ফ্যাক্টরিসহ অন্যান্য স্থাপনা। চা-বাগান কর্তৃপক্ষের লিজ নেওয়া ৩৭১ একর ভূমি দখল করে ৪৪টি খাসিয়া পরিবার পান চাষ ও বসবাস করছে। বাগান কর্তৃপৰ পরিবার প্রতি এক একর ভূমিতে পান চাষ করার প্রসত্দাব করলে খাসিয়ারা তা মেনে নেয়নি। ঝিমাই খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান (মন্ত্রী) রানা সুরং জানান, গাছ কাটা হলে তাদের জীবন-জীবিকার আয়ের উৎস পান চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের না খেয়ে মরতে হবে। তাছাড়া পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে নানা ধরনের রোগ-বালাইয়ের শিকার হতে হবে। বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রভাত কুসুম আচার্য জানান, বাগান কর্তৃপৰের সৃজিত এবং প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া গাছ বাছাই করে কাটার জন্য অনুমোদনকৃত গাছ চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়েছে। ঝিমাই চা-বাগানের ম্যানেজার জাকির হোসাইন জানান, খাসিয়ারা বাগানের অর্ধেক জায়গা দখল করে রেখেছে এবং বাগান সম্প্রসারণের জন্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেও লিজকৃত ভূমির গাছ কাটতে দিচ্ছে না তারা। এ কারণে বাগান সম্প্রসারণের কাজ আটকে আছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post