অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে কুলাউড়ায় হৃদয় আহমদ সদরের সংবাদ সম্মেলন


কুলাউড়া প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভাটেরা ইউনিয়নের মাইজগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মৃত সৈয়দ আলফু মিয়ার ছেলে হৃদয় আহমদ সদর। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত দশটায় কুলাউড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন দাবি করে বলেন, আমি বিএনপির একজন কর্মী ছিলাম। কখনই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না কিংবা কোন পদবীতে ছিলাম না। সম্প্রতি ভাটেরা ইউনিয়নে আমার প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে যাতে আমি বিএনপির ওয়ার্ড কমিটিতে না ঢুকতে পারি। আমি উপজেলা ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, আপনারা আমার বিষয়টি যাচাই করে দেখবেন আমি যদি প্রকৃত আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে থাকি এবং আওয়ামীলীগের কোন পদ-পদবীতে থাকি কিংবা দলীয় প্যাডে আমার নাম থাকে সেটা যদি প্রমাণিত হয় তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দিব। গত ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে আমি সৈয়দ সদর মিয়া সদস্য পদ নবায়ন করি।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামীলীগ-যুবলীগ নেতাদের সাথে ভাইরাল হওয়া ছবি প্রসঙ্গে হৃদয় আহমদ সদর বলেন, আমি ভাটেরা ফুটবল একাডেমীর সভাপতি। ভাটেরার ক্রীড়াঙ্গণে আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করলে ওই সকল অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতাসহ আমন্ত্রিত অতিথি আসলে তাদের সাথে ছবি উঠেছি। ওইসকল ছবিতে শুধু আমি একা ছিলাম না, সর্বদলীয় লোক ছিলেন। যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন তারা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। বিগত দিনে আওয়ামীলীগ নেতাসহ তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডে তাদের ছবি রয়েছে। সেই সকর প্রমাণ রয়েছে আমার কাছে।

তিনি বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ভাটেরা ইউনিয়নে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিলে হয়।  সেখানে ইউনিয়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ রনি হাসান সালামসহ ওয়ার্ডের সকল নেতৃবৃন্দ আমাকে সমর্থন করে সদস্য হিসেবে কমিটিতে রাখার জন্য দাবি জানান। কিন্তু বিএনপির আহবায়ক আবুল কালাম তছন আমার বিরোধিতা করে আপত্তি করেন। উনার সাথে তো আমার ব্যক্তিগত কোন বিরোধ নেই। তাহলে তিনি কেন এমন করলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভাটেরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুর রহমান সিদ্দিকী, ভাটেরা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ মইনুল ইসলাম লাকী, ইউপি সদস্য ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাাদক মো. তেরা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মো. ছালেক আহমদ, ওয়ার্ড সদস্য মুহিবুর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে ভাটেরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাাদক মো. তেরা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মো. ছালেক আহমদ, ইউপি সদস্য ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দিনসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ভাটেরা ইউনিয়নে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি খুবই সুন্দরভাবে গঠন করা হয়েছে। কিন্তু হৃদয় আহমদ সদরের নাম ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রনি হাসান সালাম ও ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যরা যখন প্রস্তাব করেন তখন আপত্তি করেন আহবায়ক আবুল কালাম। আপত্তি করলে ওয়ার্ডের নেতারা করবেন সেখানে কেন আহবায়ক একা আপত্তি করলেন। অথচ দলীয় সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে আহবায়ক আবুল কালাম আগে বলেছিলেন, আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কেউ পদ-পদবীতে থাকলে তারা বিএনপির কমিটিতে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারবেনা, সদস্য হিসেবে থাকতে পারবে। কিন্তু কাউন্সিলের দিন ওয়ার্ড বিএনপির সকল সদস্যের মতামতকে উপেক্ষা করে শুধু আহবায়ক আবুল কালাম আপত্তি করেন হৃদয় আহমদ সদরকে কমিটিতে সদস্য হিসেবে না রাখতে। ওইসময় আহবায়ক আবুল কালামের সাথে যুগ্ম আহবায়ক রনি হাসান সালামের বাগবিতন্ডা হয়। বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে আহবায়কসহ কিছু নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানস্থল থেকে চলে গেলে আহবায়ক কমিটির ৮ জন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ইউনিয়নের আরো কয়েকটি ওয়ার্ডে বিএনপির কমিটিতে আওয়ামীলীগের কিছু লোক স্থান পেয়েছে তখন তো কোন সমস্যা হলো না। সদরকে ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে সদস্য রাখলে আমাদের কোন সমস্যা নেই। ওয়ার্ডের সকল নেতাকর্মীদের সমর্থন রয়েছে সদরের পক্ষে। আমরা বিতর্কিত কাউকে কমিটিতে রাখার জন্য প্রস্তাব করিনি।

Post a Comment

Previous Post Next Post