স্টাফ রিপের্টার: গেল কয়েকদিন থেকে মৌলভীবাজার অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমশ নীচে নামতে শুরু করেছে। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়া কারনে স্বাভাবিক জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিদিনের ন্যায় বিকেল হলে শীতের তীব্রতা বেড়ে তা সকাল পর্যন্ত তা অব্যাহত রয়েছে। শীতের কারণে সবচেয়ে বেশী ছিন্নমুল, বস্তিবাসী ও দিনমজুররা পড়েছেন সীমাহীন ভুগান্তিতে।
শীতজনিত রোগে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের নিয়মিত ভর্তি অব্যাহত রয়েছে। গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভীর প্রতিদিন বাড়ছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আগের দিন সোমবার ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার এ অবস্থা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে এবং শৈত্যপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাপমাত্রা কম থাকলেও মৌলভীবাজারের সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলেছে। ঝলমলে রোদ উষ্ণতা ছড়িয়েছে।
শীতের কারণে বিশেষ করে দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ খুব কষ্টে আছেন। শীত উপেক্ষা করেই তাদের কাজের সন্ধানে বের হতে হচ্ছে। আগের মতো কাজও পাচ্ছেন না তারা। রিকশাচালক, দিনমজুর, ফেরিওয়ালাসহ ভাসমান ব্যবসায়ীদের আয়রোজগার কমে গেছে। গ্রামাঞ্চল-চা-বাগান এলাকার মানুষদের খড়কুটো জ্বালিয়ে তাদের শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। সকাল গড়িয়ে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না। দিনের বেলায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। আর সন্ধ্যার পর ঘনত্ব আরও বেড়ে যাচ্ছে। অদূরের মানুষজন, বস্তু বা যানবাহন দেখা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ।
শীতের প্রকোপ বাড়ায় প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করছে।
মৌলভীবাজার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাদু মিয়া বলেন, জেলায় ১০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। প্রথম দফায় নগদ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে ২১ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় দফায় সাড়ে ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এসব টাকা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার অনুকূলে বরাদ্দ। পরবর্তীতে কোটেশন করে কম্বল কিনে পর্যায়ক্রমে বিতরণ করবে।’
মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান বলেন, প্রতিদিনের মত শীতজনিত রোগে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালসহ উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্য বাড়ছে। হাসপাতালে ভর্তি কম হলেও আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন সহস্রাধিক নানা বয়সী রোগী।
