লাউয়াছড়ায় আগুন: তদন্ত কমিটি গঠন



অনলাইন ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই কমিটিতে রয়েছেন বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা মীর্জা মেহেদী সরওয়ার ও বন মামলা পরিচালক জুলহাস উদ্দিন। তাদের দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

শনিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বেসকারি উন্নয়ন সংস্থা হীড বাংলাদেশের কার্যালয় সংলগ্ন বাঘমারা বন ক্যাম্পের পাশে সংরক্ষিত এ আগুন লাগে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বনে আগুন জ্বললে। বিকেল ৪টার দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। আগুনে প্রায় দেড় একর বন পুড়েছে। বন এলাকার ছোট-বড় লতা-গুল্ম ও গাছ পুড়ে যাওয়ায় জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকির হয়ে দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রখর রোদে লাউয়াছড়ার স্টুডেন্ট ডরমেটরি অংশে গাছ রোপনের জন্য কাজ করছিলেন বন বিভাগের কিছু শ্রমিক। সেখানে হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠে। খবর পেয়ে বন বিভাগ ও কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে প্রায় পৌনে তিন ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে পানি স্বল্পতা ও বনের ভেতরে রাস্তা না থাকায় ভেতরে ঢুকতে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সময় লেগেছে। আগুনে বড় সাইজের কোনো গাছ পুড়তে দেখা না গেলেও বনের লতা-গুল্ম, ছোট ছোট গাছ গাছালি পুড়ে গেছে। এতে বন্যপ্রাণীর ব্যাপক আবাসস্থল বিনষ্ট হয়ে গেছে। এতে জীববৈচিত্র্যের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

তবে আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কোনো কারন জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, কর্মরত শ্রমিকদের সিগারেট থেকে কিংবা স্থানীয়ভাবে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এখানে কিছু অবৈধ দখলদার আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, প্রচণ্ড খরতাপের সুযোগ কাজে লাগিয়ে এসব অবৈধ দখলদারেরাই আগুন লাগাতে পারেন। দেড় বছর আগেও এই বনে আগুন লেগেছিল।

ফায়ার সার্ভিস কমলগঞ্জের ইনচার্জ ফারুকুল ইসলাম জানান, গাছগাছালি পুড়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কারণে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়।

লাউয়াছড়ার রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত করা হচ্ছে কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।’

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ও বনকর্মীরা যৌথভাবে বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবেও আগুন লাগাতে পারে অথবা কর্মরত শ্রমিকদের সিগারেটের আগুন থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। প্রায় দেড় একর জায়গার লতা-পাতা ও ছোট ছোট গাছগাছালি পুড়ে গেলেও বড় কোনো গাছ পুড়েনি। অগ্নিকান্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Post a Comment

Previous Post Next Post