কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে ৪ মেয়র প্রার্থী হলফনামায় যা লিখলেন

নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৪ মেয়র প্রার্থীর হলফনামায় উঠে এসেছে তাদের সম্পদ, শিক্ষার বিবরণ। কেউ শিক্ষায় এগিয়ে থাকলেও সম্পদে পিছিয়ে আবার কেউ সম্পদে এগিয়ে থেকেও শিক্ষায় পিছিয়ে। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী শিক্ষায় এগিয়ে আছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (বর্তমান মেয়র) শফি আলম ইউনুছ স্বশিক্ষিত। বিএনপির কামাল উদ্দিন জুনেদ পেশায় কৃষক। স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়া প্রবাসী।

আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ :

প্রথমবারের মত নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি স্নাতকোত্তর পাস। তাঁর জন্ম ১৯৭৩ সালের ২৫ মে। তিনি কুলাউড়ার ভাটেরা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাৎসরিক আয় ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৫২৮ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ২৬ লাখ ৭ হাজার ২৩২ টাকার। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ৯ একর কৃষি জমি, বাড়ি এক দশমিক ৭৬ একর তাঁর পিতার নামে রয়েছে। তাছাড়া এবিএম ছমরু মিয়া নামে একটি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। জনতা ব্যাংক কুলাউড়া শাখায় ১০ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে। ৪টি ফৌজদারি মামলার সবগুলোই নিষ্পত্তি হয়েছে।

হলফনামায় মেয়র শফি আলম ইউনুছ উল্লেখ করেন:

আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ তৃতীয় বারের মত মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি স্ব-শিক্ষিত হলেও সম্পদে এগিয়ে আছেন। পেশা ঠিকাদারী, পরিবহন, মহাল ব্যবসা ও জোনাকী ব্রিক্স নামে একটি ইটের ভাটা রয়েছে। তার বাৎসরিক আয় ৪০ লাখ ৭৩ হাজার ৯৬৬ টাকা। অস্থাবর সম্পদে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন খাতে তার সম্পদ রয়েছে ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৫ টাকার।

তিনি মেয়র হিসেবে সম্মানী গ্রহণ করেন বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ৫ বছরে শুধু সম্মানী থেকে নিয়েছেন ২৪ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন, শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন। তাঁর বার্ষিক আয় ৫৪ লাখ ৭ হাজার ৫৭০ টাকা। এ হিসাবে বর্তমানে তাঁর আয় গতবারের চেয়ে কিছুটা কমেছে।

বিএনপি প্রার্থী কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ :

চতুর্থ বারের মত নির্বাচন করছেন বিএনপি মনোনীত ও কুলাউড়া পৌরসভার সাবেক ২ বারের মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ। তাঁর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১০ জুন। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি এইচএসসি পাস। পেশায় কৃষক কামাল উদ্দিন আহমদের বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। রয়েছে ৮ লাখ ৪৭ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি। অকৃষি জমি দশমিক ২৫৭৫ একর, দোকান ৫টি, ২০ দশমিক ৮৮ শতকের যৌথ মালিকানাধীন বাড়ি রয়েছে। দু’টি মামলা থেকে তিনি অব্যাহতিপ্রাপ্ত।

অন্যদিকে পাঁচ বছর আগে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর বাৎসরিক আয় ছিল ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদে দেখানো হয়Ñ নগদ টাকার পরিমাণ ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা, ব্যাংক সঞ্চয়ী ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, এফডিআর ১৫ লক্ষ টাকা। স্ত্রীর নামে এফডিআর ৫ লক্ষ টাকা ও সঞ্চয়ী ছিল ৬৩ হাজার টাকা। স্বর্ণ ১৫ ভরি ছিল স্ত্রীর নামে। স্থাবর সম্পদে দেখানো হয়, কৃষি জমি ৩৬ শতক। স্ত্রীর নামে ৫ শতক।

স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়া :

প্রথম বারের মত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন মো. শাজান মিয়া। তাঁর জন্ম ১৯৬৫ সালের ২০ ডিসেম্বর। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি ৫ম শ্রেণি পাস। কাতার প্রবাসী হলেও হলফনামায় তিনি পেশা হিসেবে কৃষক উল্লেখ করেছেন। বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। যা বৈদেশিক রেমিট্যান্স থেকে আসে। অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। তবে তাঁর নামে কোনো মামলা নেই।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আহসান ইকবাল বলেন, আমরা ব্যালটের মাধ্যমে আগামী ১৬ জানুয়ারির কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচন একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিব। এতে ভোটার ও সাধারণ জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি। পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৭ শত ৫৯।

উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে গত ২২ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় ধাপের ১৬ জানুয়ারির পৌরসভা নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চার প্রার্থী। প্রত্যেক প্রার্থীই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট কামনা করছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post