বিশ্বব্যাপী মৃত্যু প্রায় ৯৬ হাজার, আক্রান্ত ১৬ লাখ


অনলাইন ডেস্কঃ করোনার ছোবলে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ১৬ লাখ ছাড়িয়েছে। প্রকোপ ঠেকাতে দ্বিতীয় দফা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও থেমে নেই লাশের স্রোত। যার সংখ্যা লাখ ছুঁই ছুঁই করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটির কবলে পড়েছেন বিশ্বের ৮৬ হাজারের বেশি মানুষ। যেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬ লাখ ৪ হাজার ৫৩৫ জনে। অপরদিকে, মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে আরও ৭ হাজার ২৩৬ জন। এতে করে উৎপত্তির তিন মাসে প্রাণহানির সংখ্যা ৯৫ হাজার ৬৯৩ জনে ঠেকেছে। 

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট ৪ লাখ প্রায় ৬৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৬ হাজার ৭০০ জনের। তবে মৃতের হিসাবে শীর্ষে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৮ হাজার ২৭৯। আর আক্রান্ত এক লাখ ৪৩ হাজার ৬২৬ জন।

এরপরই রয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ স্পেন। করোনায় প্রাণহানির দেশের তালিকায় যার অবস্থান ইতালির পরেই। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২২২ জন। যেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৪৪৭ জনের।

মৃতের সংখ্যায় চতুর্থ স্থানে একই মহামদেশের ফ্রান্স। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ৭৪৯ জন। এরমধ্যে ১২ হাজার ২১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ইরানে মারা গেছে যথাক্রমে ৭ হাজার ৯৭৮ এবং ৪ হাজার ১১০ জন। 

উৎপত্তিস্থল চীনে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৩৩৭। যদিও দেশটির বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপনের অভিযোগ রয়েছে। উহানের একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, ‘বুদ্ধি-বিবেচনাসম্পন্ন যেকোনও মানুষ এই সংখ্যা (সরকারি পরিসংখ্যান) নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবেন।’

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতে সময়ের সাথে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশটিতে ২১ দিনের লকডাউন চলার মধ্যেও প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ২২৭ জন।

আর বাংলাদেশে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩০ জন। এর মধ্যে প্রাণ গেছে ২১ জনের। গত ৮ মার্চ প্রথম দেশে করোনা শনাক্ত হয়।

এদিকে, ভাইরাসটির মহামারি রূপ এখনও সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পৌঁছায়নি বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনের মতো সংঘাত কবলিত দেশগুলোতে সংক্রমণ শুরু হলে পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়কর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন গুতেরেস।

তিনি বলেন, ‘ভাইরাসটি দেখিয়ে দিয়েছে কত দ্রুত তা সীমান্ত পার হতে পারে, দেশ বিধ্বস্ত করে দিয়ে জীবন কেড়ে নিতে পারে।’ করোনা মহামারি মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে আরও বেশি সহায়তা দিতে উন্নত দেশ এবং বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।

আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক আক্রমণাত্মক বার্তার মুখে করোনা ভাইরাসের মহামারি মোকাবিলা করতে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)।

বুধবার দেয়া এক ভাষণে সংস্থাটির মহাপরিচালক টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস এই নিয়ে রাজনীতি থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি, করোনা-রাজনীতিকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post