কুলাউড়ায় সংস্কার কাজে ‘অনিয়ম’, সড়ক বন্ধ করে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ


বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পুষাইনগর হতে ভুকশিমইল ইউপি সড়কের গৌরিশংকর এলাকায় কাজের অনিয়মের অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার সকালে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এসময় স্থানীয় জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়কের কাজে নিয়োজিত রুলার গাড়ি আটকে দিলে প্রায় ঘন্টা খানেক সময় এ সড়কে গাড়ি-চলাচল বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজির হয়। পরে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ সঠিকভাবে সম্পাদনের প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা শান্ত হয় এবং কাজ চালিয়ে যাওয়ার সম্মতি দেয়।

কুলাউড়া এলজিইডি ও স্থানীয় এলাকা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সেকেন্ড রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরটিআইপি-২) প্রকল্পের আওতায় কুলাউড়া উপজেলার পুষাইনগর আরএন্ডএইচ সড়ক হতে ভূকশিমইল ইউপি অফিস পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতে ১০ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় মেসার্স মুহিবুর রহমান নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের ১৯ মে কাজটি শুরু হয়। কাজ শেষ হবার সময়সীমা আগামী বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর।

১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার উপজেলার পুষাইনগর-ভূকশিমইল সড়কের গৌরীশঙ্কর এলাকায় কাজে অনিয়ম হচ্ছে এমন অভিযোগে সকাল ১১ টায় কাজ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় এলাকাবাসী। প্রায় দেড় ঘন্টা কাজ বন্ধ রাখার পর উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইসতিয়াক হাসান ও ঠিকাদার মুহিবুর রহমান ঘটনাস্থলে যান।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তা কার্পেটিংয়ে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ ঢালাই হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১ ইঞ্চি পরিমাণে কাজ করছে। আবার রাস্তার অনেক জায়গায় আধা ইঞ্চি পরিমাণেরও কাজ হয়েছে। কার্পেটিং করার পর হাত দিয়ে টানলে তা উঠে যাচ্ছে।

কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার মো. মুহিবুর রহমান জানান, রাস্তার কাজ চলমান আছে। এই রাস্তায় প্রাইম কোড করা হয়েছে মাত্র। কাজ শেষ হলে এই কাজ অনেক মজবুত হবে। চলমান কাজে কোন অনিয়ম হলে সেটা আমরা ঠিক করে দিব। শিডিউল অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিকভাবে ১ ইঞ্চি পরিমাণে কাজ হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন ভুল বুঝে কাজে বাঁধা দিয়েছে। পরে উপজেলা প্রকৌশলীসহ এলাকার গণমাণ্য ব্যক্তিদের সাথে কাজের শিডিউল দেখিয়ে বুঝানোর পর কাজ শুরু হয়। এই ভুল বুঝাবুঝির কারণে কিছুটা সময় কাজ বন্ধ ছিলো।

উপজেলা প্রকৌশলী মু. ইসতিয়াক হাসান বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে শিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। এলাকাবাসী মনে করেছে ৩ ইঞ্চি পরিমাণে পিছ ঢালাই কাজ হবার কথা। কিন্তু ভুল বুঝাবুঝির কারণে কাজ কিছুক্ষণ বন্ধ ছিলো। নতুন ঢালাই কাজে স্থানীয় কিছু লোকজন পিছের ঢালাই তুলে নেয়। পরে ঠিকাদারের উপস্থিতিতে এলাকাবাসীকে কাজের শিডিউলের (ইস্টিমিট) কপি দেখানো এবং বুঝানোর পর তারা মূল বিষয়টি বুঝতে পারে।

Post a Comment

Previous Post Next Post