আবরার হত্যা: বিচার হবে দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে


নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশ বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে হবে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল জানিয়েছেন।

২৫ জনকে আসামী করে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে যে চার্জশিট বা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে, আবরার ফাহাদের বাবা-মা তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে বিচার দাবি করেন।

বুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে বিচার দাবি করে আসছিলেন।

সেই প্রেক্ষাপটে এখন পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়ার পরপরই আইনমন্ত্রী আলোচিত এই হত্যাকান্ডের বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে করার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

এই হত্যাকান্ডের ব্যাপারে অভিযোপত্রে আসামীদের বেশিরভাগই ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার নেতা-কর্মী ছিলেন।

অভিযোগপত্র নিয়ে বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বলেছেন, আসামীরা র‍্যাগিংয়ের নামে বুয়েটে আতংক বা একটা ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল, তার ধারাবাহিকতাতেই একাধিক কারণে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। এর তথ্য-প্রমাণ তারা তদন্তে পেয়েছেন।

চার্জশিট নিয়ে আবরারের বাবা মা কি বলছেন
ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যে অভিযোগপত্র দেয়ায় আবরার ফাহাদের বাবা-মা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তা নিয়েও তারা সন্তুষ্ট।

আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলছিলেন, এখন তারা দ্রুত বিচার চান।

"অল্প সময়ের মধ্যে চার্জশিট দিয়েছে, সেজন্য আমি পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এখন আমি চাইবো, পলাতক থাকা চারজনকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।"

তিনি আরও বলেছেন, "আমি আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এবং এই বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে করা হোক। আমি আরও চাই,বিচারের পর রায় দ্রুত কার্যকর করা হোক।"

বিচার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এই বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালেই হবে।

এর প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেছেন, বিচার শুরুর আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তরের আবেদন আসতে হবে।

সেই আবেদন এলেই তার ভিত্তিতে ট্রাইবুনালে নেয়ার সিদ্ধান্ত আসবে এবং প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আদালত স্থানান্তর হবে।

তখন হাকিমের আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে তা পাঠিয়ে দেবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন,মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইনালে নেয়ার ব্যাপারে শিগগিরই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

বুয়েটের শিক্ষার্থীরা এখন কি চাইছেন
আাবরার হত্যাকান্ডের পরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েট কর্তৃপক্ষ আসামীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করেছিল।

তাদের স্থায়ী বহিস্কারসহ কয়েকদফা দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্লাস বা পরীক্ষাও বন্ধ হয়ে রয়েছে।

এই আন্দোলনকারীদের অন্যতম একজন অন্তরা তিথী বলছিলেন, এখন আসামীদের বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হলে তারা ক্লাসে যোগ দেয়ার বিষয় বিবেচনা করতে পারেন।

বুয়েট কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলছিলেন, তাদের নিজেদের তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তারা স্থায়ী বহিস্কার করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

"এখন চার্জশিট হয়েছে। ফলে আমাদের বুয়েটের তদন্ত কমিটি সেখান থেকে তথ্য এবং আসামীদের জবানবন্দী বিবেচনায় নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারে। আমাদের তদন্ত কমিটি এখন যে সুপারিশ করবে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবো।"

তিনি আরও বলেছেন, তাদের বিশ্ববিদ্যারয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী আজীবন বহিস্কার করা যায়। -
বিবিসি

Post a Comment

Previous Post Next Post