অজিদের বিপক্ষে জয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড


স্পোর্টস ডেস্কঃ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দাপুটে জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে যাওয়ার লড়াইয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় পায় ইয়ন মরগানবাহিনী। ১৪ জুলাই ঐতিহাসিক লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

এনিয়ে চতুর্থবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিল ইংল্যান্ড। এর আগে ১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ১৯৯২ আসরে রানার্সআপ হয়েছিল ক্রিকেটের জনকরা। আর টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল খেলবে নিউজিল্যান্ড। ফলে এবারে নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে ক্রিকেট বিশ্ব।

বৃহস্পতিবার (জুলাই ১১) বার্মিংহামের এজবাস্টনে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় শেষ চারের ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। যেখানে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ।

প্রথমে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়া ৪৯ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ২২৩ রান করতে পারে। জবাবে ১০৭ বল বাকি থাকতে মাত্র ২ উইকেট হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংলিশরা।

২২৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই ইংল্যান্ড ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। মাত্র ১৭.২ ওভারেই তারা ১২৪ রান তুলে জয়কে সহজ করে দেন। বেয়ারস্টো ব্যক্তিগত ৩৪ করে মিচেল স্টার্কের শিকার হন। ৪৩ বলে ৫টি চারে নিজের ইনিংস সাজান তিনি।

এ উইকেটের মাধ্যমে অবশ্য ব্যক্তিগত এই কীর্তি গড়ে ফেলেন স্টার্ক। স্বদেশী গ্লেন ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের বিশ্বরেকর্ড গড়েন তিনি। তার উইকেট সংখ্যা ২৭টি।

বেয়ারস্টোর বিদায়ের পর বিধ্বংসী রয় খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। সেঞ্চুরি বঞ্চিত এই ডানহাতি ৬৫ বলে ৮৫ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলে প্যাট কামিন্সের শিকার হন। তিনি ৯টি চার ও ৫টি ছক্কা হাঁকান।

জয়ের জন্য বাকি পথটুকু দেখেশুনে লড়ে যান জো রুট (৪৯) ও অধিনায়ক মরগান (৪৫)। অপরাজিত থেকেই তারা মাঠ ছাড়েন।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া ২২৩ রানে গুটিয়ে যায়। ইংল্যান্ডের বোলারদের সামনে স্টিভেন স্মিথ ছাড়া সেভাবে কেউই দাঁড়াতে পারেননি। ফলে ফাইনালে উঠতে সহজ লক্ষ্যই পায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা।

এদিন অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম থেকেই ব্যাপক চাপে রখে ইংল্যান্ড। শুরুতেই তিন উইকেট হারায় অজিরা। এরপর ৪৯ রানের ব্যাবধানে আরও চার উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে দলটি।

টস জিতে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত ছন্দে থাকা দুই ওপেনারকে সাজঘরে পাঠান ইংলিশ বোলাররা। দলীয় চার রানে অ্যারন ফিঞ্চকে ব্যক্তিগত শূন্য রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন জোফরা আর্চার। পরের ওভারেই ৯ রান করা ডেভিড ওয়ারনর্কে জনি বেয়ারস্টোর ক্যাচে পরিণত করেন ক্রিস ওকস। এরপর দলীয় ১৪ রানে পিটার হ্যান্ডসকম্বকে (৪) বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন ওকস।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে স্টিভেন স্মিথ ও অ্যালেক্স ক্যারি ১০৩ রান যোগ করে প্রাথমকি চাপ সামাল দেন। ৪৬ রান করা ক্যারি আদিল রশিদের বলে জেমস ভিন্সের তালুবন্দি হন। একই ওভারে মার্কাস স্টোইনসকে (০) ফেরান এই লেগস্পিনার। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন জোফরা আর্চার। ২৩ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ২২ বরে ইয়ন মরগানের কাছে ক্যাচ দেন ম্যাক্সওয়েল।

আদিল রশিদের তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন প্যাট কামিন্স (৬) সেই সঙ্গে সপ্তম উইকেটের পতন হয় অজিদের। তবে শেষ দিকে স্মিথ-স্টার্ক জুটি দলটিকে দু’শ রানের কোটা পার করতে সাহায্য করে। অষ্টম উইকেটে তারা ৫১ রান তোলেন। মিচেল স্টার্ক ৩৬ বলে ২৯ রান করে ক্রিস ওকসের বলে বিদায় নেন। তবে রান আউটের ফঁদে পড়া স্মিথ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। ১১৯ বলে ৬টি চারের সাহায্যে সাবেক এই অধিনায়ক দলীয় সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন।

ইংলিশ বোলারদের মধ্যে ওকস ও রশিদ তিনটি করে উইকেট দখল করেন। জোফরা আর্চার দুটি ও মার্ক উড একটি উইকেট পান।

Post a Comment

Previous Post Next Post