শ্রীলংকায় গণহারে মুসলিম গ্রেফতার


অনলাইন ডেস্কঃ শ্রীলংকায় ইস্টার সানডেতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর মুসলিমদের গণহারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সামান্য অজুহাত পেলেই এমন গ্রেফতারের শিকার হচ্ছেন তারা।

এছাড়া মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা নিয়ে লেখার কারণে গ্রেফতারের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরাও। গ্রেফতার ও পুলিশি হয়রানি বৃদ্ধির এমন দাবি করেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নেতা, অধিকারকর্মী ও রাজনীতিকরা।
এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠী ফ্রি মিডিয়া মুভমেন্ট ও হিউম্যান রাইটস কমিশন অব শ্রীলংকা। খবর আলজাজিরা ও এএফপির।

শ্রীলংকা পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনসেকারা বলেছেন, ইস্টার সানডে হামলা অথবা সংশ্লিষ্ট ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত দুই হাজার ২৮৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে এক হাজার ৮২০ জন মুসলিম। গ্রেফতার হওয়া এসব মানুষের মধ্যে এক হাজার ৬৫৫ জনকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ৬৩৪ জন এখনও পুলিশি হেফাজতে আছেন।

তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে অথবা তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। রিমান্ডে নেয়া ৪২৩ জনের মধ্যে ৩৫৮ জনই মুসলিম। শুধু পোশাকের কারণে ১৭ মে ৪৭ বছর বয়সী এক নারী আবদুল রহিম মাজাহিনাকে গ্রেফতার করা হয়।

তার পোশাকে ছিল জাহাজের চাকার ছবি। পুলিশের দাবি, এটি ধর্মচক্রের ছবি। ধর্মচক্র হল বৌদ্ধদের ধর্মীয় প্রতীক। ফলে তিনি এ পোশাক পরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন।

ছবিটি ধর্মচক্রের কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেনি শ্রীলংকার বৌদ্ধ ধর্মবিষয়ক ডিপার্টমেন্ট। ঘৃণাপ্রসূত আইনের অধীনে পুলিশ মাজাহিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে।
অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমাকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে ওসি মাথার স্কার্ফ খুলে ফেলতে বাধ্য করেন। এ সময় অন্য অফিসাররা আমার ছবি তুলতে থাকেন।

১৭ দিন জেলে থাকার পর ৩ জুন মুক্তি পান তিনি। কারাগারে থাকাকালে প্রহরীরা তাকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে ডাকত। তাকে আবার নভেম্বরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে।

তিনি অভিযুক্ত হলে দুই বছর জেল হতে পারে। নষ্ট একটি মেমোরি কার্ড কাছে থাকায় আটক হয়েছিল আসলাম রিজভি (২০)। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় গ্রেফতার করা হয়েছিল আবদুল আরিসকে (১৯)। চলতি মাসেই মুসলিমদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় মন্ত্রিসভা থেকে ৯ মুসলিম মন্ত্রীর সবাই পদত্যাগ করেন। ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে মুসলিম আইনপ্রণেতার সংখ্যা ছিল ১৯। পদত্যাগ করা মুসলিম কংগ্রেস নেতা ও মন্ত্রী রউফ হাকিম বলেন, সামান্য কারণে মুসলিমদের হয়রানি ও আটক করা হচ্ছে। তার ভাষায়, এটা সত্য, ২১ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলাকারীরা আমাদের সম্প্রদায়েরই। কিন্তু ওই হামলার প্রথম দিন থেকেই ওইসব সন্ত্রাসীর মূলোৎপাটনে তিন বাহিনীকে সহায়তা করে যাচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়।

Post a Comment

Previous Post Next Post