‘এমন ট্রেন দুর্ঘটনায় আর কোন সন্তান যেনো মা হারা না হয়’


বিশেষ প্রতিনিধিঃ সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেল দুর্ঘটনায় নিহত পৌরশহরের বাসিন্দা মনোয়ারা পারভীনের বাসায় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও বনপরিবেশ মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ নিহতের স্বজনদের দেখতে গেলে তাদেরকে পেয়ে নিহতের দুই মেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলতে থাকেন ‘এমন দুর্ঘটনায় আর কোন সন্তান যেনো মা হারা না হয়, আমরা আমাদের মায়ের এমন মৃত্যু চাইনি’।



এসময় রেলমন্ত্রী এবং বন পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রী তাদের সান্তনা দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানান। পরে সহযোগিতা স্বরুপ ১ লক্ষ টাকা নিহত মনোয়ারা পারভীনের মেয়ের হাতে তুলে দেন। দুর্ঘটনায় বাকি নিহতদের এক লক্ষ ও আহতদের ১০ হাজার টাকা সহযোগিতা প্রদানের কথা জানান রেলমন্ত্রী।

রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং বনপরিবেশও জলবায়ু মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ বুধবার দুপুর পৌনে একটার দিকে সিলেট থেকে কুলাউড়ার বরমচালে রোববার রাতে সংঘটিত উপবন ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। সেখানে তাঁরা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ জানতে চান। পরে তাঁরা ঘটনাস্থলের পাশে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সভায় যোগ দেন। সভায় বক্তব্য দেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন , বরমচালবাসীর জোড়ালো দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেন, 'আপনারা চেয়েছেন একটা আন্তঃনগর ট্রেন স্টপেজ, আর আমি আপনাদের ঘোষণা দিচ্ছি সিলেট-ঢাকা, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন বরমচাল রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নে সমাবেশে স্থানীয়রা স্মারকলিপির মাধ্যমে দাবি উপস্থাপন করলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন। এসময় উপস্থিত জনতা হাততালী দিয়ে মন্ত্রীর ঘোষণাকে স্বাগত জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বনপরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান। 

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক তোফায়েল আহমদ, বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি এম এম শাহীন, জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্নসাধারন সম্পাদক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ.কে. এম সফি আহমদ সলমান সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, সাবেক সাংসদ, রেলওয়ে কর্মকর্তা, উপজেলা ও থানা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন , রেল, সড়ক, নৌ ও বিমানে সবজায়গায় ঝুঁকি রয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে দুটি কমিটি তদন্ত করছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে দুর্ঘটনার মূল কারণ জানা যাবে। 

জরাজীর্ণ সেতুগুলো দ্রুত সংস্কার করা হবে। তাছাড়া সিলেট আখাউড়া রেলপথ ডুয়েলগেজ করার জন্য মন্ত্রী পরিষদে বরাদ্দ পেয়েছে সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে এ রেলপথটি আধুনিক ও নিরাপদ হবে। দুর্ঘটনায় রেল কর্মকর্তাদের কারো গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পরে তাঁরা কুলাউড়ায় নিহত মনোয়ারা পারভীনের বাসায় যান এবং সেখান থেকে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে অবস্থান করছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post