আবিদা হত্যার ঘটনায় ১০ দিনের রিমান্ডে তানভীর

বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের চাঞ্চল্যকর নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানার হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী মসজিদের ইমাম তানভীর আলমের ১০ দিন ও তানভীরের স্ত্রী হালিমা সাদিয়া, ভাই আফসার আলম ও মা নেহার বেগমের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিজ্ঞ আদালত।

মঙ্গলবার ২৮ মে দুপুরে বড়লেখার জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাশ কুমার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড প্রার্থনা করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার রাতে পৈত্রিক বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে আইনজীবী আবিদা সুলতানার লাশ দাফন করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে বড়লেখা থানায় নিহতের স্বামী শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে এই হত্যার ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি করা হয় আবিদা সুলতানাদের বাড়িতে ভাড়া থাকা স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আলম, তার স্ত্রী হালিমা সাদিয়া, ভাই আফসার আলম ও মা নেহার বেগমকে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে এ মামলায় আসামি করা হয় বলে মুঠোফোনে জানিয়েছেন বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো: জসিম উদ্দিন।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার কাঠালতলী এলাকায় আবিদা সুলতানা নামের ওই আইনজীবী দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন। কিন্তু কি কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে সে নেপথ্যের ঘটনা এখন স্পষ্ট হয়নি। ওই ঘটনার পর ওই আইনজীবীর বাবার বাড়িতে ভাড়াটিয়া থাকা স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আলম পলাতক ছিলেন। গোপনসুত্রে খবর পেয়ে পুলিশ শ্রীমঙ্গল উপজেলার বরুনা এলাকা থেকে তাকে আটক করে। নিহত আবিদা সুলতানা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির মাধবগুল গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে। আব্দুল কাইয়ুমের তিন মেয়ের মধ্যে আবিদা সুলতানা ছোট। প্রায় ৮ বছর আগে লালমনিরহাটের আদিতমারি থানার শরীফুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। আবিদা মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। তার স্বামী শরীফুল ইসলাম একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে মৌলভীবাজার শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

২৬ মে রোববার সকাল আনুমানিক ৯টায় আবিদা বিয়ানীবাজারে বোনের বাড়িতে থেকে জরুরী প্রয়োজনে বাবার বাড়িতে যান। বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে আবিদার বোন তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাচ্ছিলেন না। পরে আবিদার বোনেরা তাকে খুঁঁজতে বাবার বাড়ি দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির মাধবগুলে আসেন। এ সময় ঘরের একটি কক্ষ বন্ধ দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা পুলিশ খবর দেন। ঘরের মেঝেতে আবিদার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।

রোববার বেলা বারোটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টার যেকোনো সময় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কে বা কারা কী কারণে তাকে খুন করেছে তা এখনো জানা যায়নি। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), বড়লেখা থানা পুলিশ ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা ওই খুনের নেপথ্যের কারন ও খুনী সনাক্ত করতে তৎপর রয়েছেন।

এদিকে আইনজীবী আবিদা সুলতানা খুনের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যসহ জেলার সর্বস্থরের মানুষ তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এবিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারা সরব রয়েছেন। এই খুনের রহস্য উদঘাটনসহ প্রকৃত আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post