অনলাইন ডেস্কঃ গত বছরের জুলাই মাসে মাত্র ১১ আউন্স ওজন নিয়ে পৃথিবীতে জন্ম নেয় শিশুটি। জন্মের পর তার আকার ছিল অনেকটা পূর্ণবয়স্ক মানুষের হৃদপিণ্ডের সমান। মাত্র নয় ইঞ্চি লম্বা ছিল শিশুটি।
একটি খালি সোডা ক্যানের থেকেও কম ওজনের শিশুটিকে তার বাবা নিজের এক হাতের তালুতে ধরে রাখতে পারতেন।
শিশুটির নাম রাখা হয় কনোর। তাকে বাঁচিয়ে রাখতে নিউইয়র্কের ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টিতে ব্লাইথেডেল চিলড্রেন হাসপাতালে সুনিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
এবার চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরছে ৯ ইঞ্চির কনোর। পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে বেশ খাপ খাওয়াতে পারছে সে। কেননা এ কয় মাসে ১১ আউন্সের কনোর এখন প্রায় ১১ পাউন্ডে পরিণত।
হাসপাতালটির শিশুবিভাগের প্রধান ডেনিস ডেভিডসন জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাড়ি ফিরতে পারবে কনোর।
সিজার করিয়ে ডেলিভারি হয় কনোরের। তবে এতো ছোট্ট শিশু বেঁচে থাকবে কি না সে আশঙ্কা তৈরি হয়।
উন্নতর চিকিৎসা দিতে মারিয়া ফেরারি চিলড্রেন হাসপাতালে নবজাতকদের আইসিইউতে পাঁচ মাস রাখা হয় তাকে। পরে ব্লাইথেডেল চিলড্রেন হাসপাতালে রাখা হয় আরও চার মাস।
আজ ৯ মাস শেষে সমস্ত আশঙ্কা কাটিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে শিশুটি।
কনোরের বেঁচে থাকার ঘটনাকে বিরল বলে অভিমত দিয়ে নিউইয়র্কের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন , জন্ম নেওয়ার মতো আকারই ছিল না কনোরের। কনোরের বর্তমান সুস্থ্যতা বিষয়ে চিকিৎসক ডেনিস ডেভিডসন বলেন, ওর ফুসফুস সুগঠিত ছিল না, নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার ছিল। তাকে খাওয়াতে বেশ বেগ পেতে হতো। বর্তমানে এসব সমস্যার একটিও নেই।
কনোরকে যুক্তরাষ্ট্রে বেঁচে থাকা সবচেয়ে ছোট আকারের শিশু বলে মনে করছেন তিনি।
এ বিষয়ে কনোরের মা ২৯ বছর বয়সী জ্যামি ফ্লোরিও বলেন, জন্মের সময় মাত্র নয় ইঞ্চি লম্বা ছিল কনোর। কিন্তু নিজের লড়াইয়ে জিতে গেছে সে। মঙ্গলবার সে প্রথমবারের মতো বাড়ি যাবে।
কনোরের বাড়ি ফেরা প্রসঙ্গে বাবা জ্যামি ফ্লোরিও বলেন, ও সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়ে বাড়ি ফিরছে এটা ভীষণ আনন্দের খবর। কিন্তু এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। ওর প্রতি যত্মবান হতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে সবসময়।
মায়ের পেটে থাকতে বিশেষ জটিলতার কারণে পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছিল না কনোর। যে কারণে তার স্বাভাবিক বিকাশ হয়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ডেনিস ডেভিডসন।