সংহতি জানিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনে ভিপি নুর


অনলাইন ডেস্কঃ বাসচাপায় সহপাঠী নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আর সেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, এই আন্দোলনে আঘাত করা হলে ‘দাঁত ভাঙা’ জবাব দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে তিনি ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সড়কের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তবে ছাত্রসমাজকে সচেতন থাকতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বানচালে বিভিন্ন মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন, এর আগেও কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে হামলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আঘাত করা হলে ছাত্রসমাজ দাঁতভাঙা জবাব দেবে।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৭টার পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেইটের সামনে আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। এরপর শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের সঙ্গে বেসরকারি নর্থ সাউথ ও ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। এতে বিমানবন্দর থেকে বিশ্বরোড ও বাড্ডা হয়ে রামপুরা এবং গুলিস্তান রুটের সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তরের নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম।

তখন শিক্ষার্থীরা তার কাছে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। তার মধ্যে রয়েছে- আবরারকে চাপা দেওয়া বাসের চালককে ফাঁসি দিতে হবে, সুপ্রভাত বাসের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে, বাসস্টপেজের ব্যবস্থা করা, সিটিং সার্ভিস বন্ধ করা, চালকদের ছবি ও লাইসেন্স গাড়িতে ঝোলানোর ব্যবস্থা করা, বসুন্ধরা গেইটে ফুটওভার ব্রিজ করা, জেব্রা ক্রসিংয়ে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা ও ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতি বন্ধ করা।

এসময় মেয়র বাসচালকের শাস্তি নিশ্চিত করা ও নিহত শিক্ষার্থীর নামে সেখানে একটি পদচারী-সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে সুপ্রভাত পরিবহনের কোনো বাস ওই রুটে চলতে দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। এরপর মেয়র অবরোধকারীদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। এসময় অবরোধকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা মেয়রের কাছে প্রশ্ন রাখেন, জাবালে নূর পরিবহন এখনো চলছে। এখনো প্রতিদিন সড়কে মানুষ মারা যাচ্ছে। অবরোধকারীদের এমন মন্তব্যের পর মেয়র ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আবরার জেব্রা ক্রসিংয়ে দিয়ে রাস্তা পার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন। এসময় অন্য একটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি আবরারকে ধাক্কা দেয়। এরপর ওই বাসের নিচে চাপা পড়েন তিনি।

নিহত আবরার আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী। তিনি রাজধানীর মালিবাগে পরিবারের সঙ্গে নিজস্ব বাসায় থাকতেন। তার বাবার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবিদ আহমেদ চৌধুরী। দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসের বিইউপি এডিবি গ্রেড গ্রাউন্ড মাঠে আবরারের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post