থাই কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে মেলবোর্নে শরণার্থী ফুটবলার আরাবি


অনলাইন ডেস্কঃ থাইল্যান্ডের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে ফিরেছেন শরণার্থী ফুটবলার হাকিম আল আরাবি। তার নিজ দেশ বাহরাইনের অনুরোধে প্রত্যার্পণের জন্য দুই মাস তাকে কারাগারে আটকে রেখেছিল থাই কর্তৃপক্ষ।

সরকারের নির্যাতনের মুখে ২০১৪ সালে বাহরাইন থেকে পালিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় নেন আরাবি। সোমবার তিনি মুক্তি পেয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।

২০১১ সালের আরব বসন্তে সমর্থনের অভিযোগে তাকে কারাদণ্ড দিয়েছিল বাহরাইনের আদালত। নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে মেলবোর্নে নামার পর তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া হচ্ছে আমার দেশ। যদিও আমি এখনো নাগারিকত্ব পাইনি। কিন্তু এটিই আমার দেশ। অস্ট্রেলিয়াকে আমি ভালোবাসি।

বিমান থেকে নামার পর কয়েক হাজার সমর্থক বিমানবন্দরে এসে তাকে করতালি ও আলিঙ্গন করে স্বাগত জানিয়েছেন। এসময় তার গায়ে নিজ ফুটবল ক্লাব প্যাসকো ভ্যালির টি-শার্ট ছিল। এই আধা-পেশাদারি ক্লাবের হয়েই মেলবোর্নে ফুটবল খেলছেন আরাবি।

সমর্থকরা ‘স্বাগত হাকিম আল আরাবি’ বলে স্লোগান দিলে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান। গত বছরের নভেম্বরে স্ত্রীকে নিয়ে ব্যাংককে হানিমুনে গেলে ইন্টারপোলের ভুল রেড নোটিশে বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রফতার করা হয়।

বাহরাইনে ২০১২ সালে আল শাবাব ফুটবল দলের হয়ে খেলার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ স্টেশনে হামলার অভিযোগে রাস্তা থেকে তাকে আটক করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তার ভাইয়ের বিরুদ্ধেও ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে রুজু করার এসব মামলা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন আল আরাবি। কারণ যখন পুলিশ স্টেশনে ভাঙচুর হয়, তখন তিনি লীগের হয়ে ফুটবল খেলছিলেন।

কিন্তু ওই বছর গণতন্ত্রের পক্ষে আরব বসন্তে তার ভাইয়ের অংশগ্রহণে সমর্থন জানিয়েছিলেন তিনি। আর এ কারণেই নির্যাতনের খড়গ চেপেছে তাদের ওপর। এ ছাড়া তিনি নিজেও একজন শিয়া মুসলমান।

থাইল্যান্ডের কারাগারকে নরক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, প্রথম দুদিন তারা আমার চোখ বেঁধে রেখেছিল। আমার মুখে ও পায়ে আঘাত করেছে। কয়েকজন পুলিশ মিলে একটানা পাঁচ ঘণ্টা আমাকে পিটিয়েছে।

‘তারা আমার মুখে ও পিঠে শীতল পানি ঢেলে দিয়েছে। তাদের ইচ্ছামতো আমার মুখ থেকে কথা বের করতে যাচ্ছেতাই নির্যাতন করেছে।’

‘তাদের যখন জিজ্ঞাসা করেছি, আমার অপরাধ কী? জবাবে তারা চিৎকার করে ওঠে আমাকে চুপ থাকতে বলেন এবং এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন,’ জানান আল আরাবি।

এর আগে বাহরাইনে মাস তিনেক আটক থাকার পর তিনি জামিনে ছাড়া পান। তার বিরুদ্ধে মামলা ছিল খুবই ঠুনকো। কাজেই তা নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা।

কিন্তু ২০১৪ সালে যখন বাহরাইনের জাতীয় দলের হয়ে তিনি কাতারে খেলতে যান, তখন তার কাছে ফোন আসে- তার ভাই ও সহযোগীরা ভাঙচুরের মামলায় দোষী সাব্যস্ত। তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post