আহতদের চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি হবে না: প্রধানমন্ত্রী


অনলাইন ডেস্কঃ চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যারা হাসপাতালে রয়েছেন তাদের চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যারা আহত হয়ে বেঁচে আছেন তাদের চিকিৎসা চলছে। তাদের চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হবে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাতে খবর এলো চকবাজারে আগুন লেগেছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ শুরু করে। যারা আহত হয়েছে, তাদের তাড়াতাড়ি সুচিকিৎসার উদ্যোগ নেয়া হয়। পাশাপাশি যারা নিহত হয়েছেন, আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই।

তিনি বলেন, এ দিন (২১ ফেব্রুয়ারি) আমরা আমাদের মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করেছিলাম। আর এ সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ৪৮ সালে, যখন আমাদের ভাষার অধিকার কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। আমরা বাঙ্গালি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। কিন্তু, সেই বাংলায় আমাদের কথা বলতে না দিয়ে বাংলা ভাষাকে কেড়ে নেয়ার একটা চক্রান্ত শুরু হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামে একটি রাষ্ট্র হয়, যার দুটি অংশ। চারটি প্রদেশ। চার প্রদেশে চার ধরনের ভাষা। আমরা যারা এই ভূখণ্ডে বাস করতাম, আমাদের ভাষা কেড়ে নিয়ে একটা বিজাতীয় ভাষা ছড়িয়ে দেয়ার চক্রান্ত করা হয়। আর সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৪৮ সালে আন্দোলন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ।

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি প্রথম এফএইচ হলে একটা সভা ডাকেন। যেখানে তমুদ্দুন মজলিস, ছাত্রলীগসহ আরও অনেক সংগঠন নিয়ে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলেছিলেন। সেই সময় ১১ মার্চ আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হয়। সারাদেশেই ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। আন্দোলন যাতে না চলে সেজন্য অনেক চক্রান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু, সব চক্রান্ত নস্যাৎ করে বাঙ্গালি মাতৃভাষার অধিকার আদায় করে নিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আদালতের রায় লেখা হয় ইংরেজিতে। সেই রায়ে কি বলা হল তা বুঝতে অনেক বিচারপ্রার্থীকে নির্ভর করতে হয় আইনজীবীর ওপর। তিনি (আইনজীবী) যা বোঝাবেন তাই সে বুঝবে, নিজে পড়ে জানার কোনো সুযোগ তার থাকে না। ফলে অনেক সময় তাকে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় অথবা তাকে একটু অন্যভাবে ব্যবহারও করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলব, আদালতের রায়টা যদি কেউ ইংরেজিতে লিখতে চান লিখতে পারেন। কিন্তু একটা শর্ত থাকবে, এটা বাংলা ভাষায় প্রচার করতে হবে, প্রকাশ করতে হবে এবং যিনি রায় পাবেন তিনি যেন পড়ে জানতে পারেন। আর ইংরেজিতে যে রায় লেখা হবে, তা যেন ‘একটু সহজ ইংরেজিতে’ লেখা হয়, সে বিষয়ে বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, যে ভাষা আমরা সবাই বুঝতে পারি, সেই ভাষায় লেখা উচিত। আর বাংলায় রায় লিখে সেটা ইংরেজিতে ট্রান্সলেশন করেও দিতে পারেন। উচ্চ আদালতসহ সর্বক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিতকরণে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭’ রয়েছে; সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আদালতসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরকে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহীবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং সরকারের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা।

Post a Comment

Previous Post Next Post