বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি !


অনলাইন ডেস্কঃ রোববার সন্ধ্যায় বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অবশেষে কমান্ডো অভিযানের মাধ্যমে অবসান ঘটে এই জিম্মি অবস্থার। অভিযানে নিহত হয় ছিনতাই চেষ্টাকারী যুবক।

তবে পুলিশ বলছে, ওই যুবকের হাতে থাকা অস্ত্রটি ছিলো খেলনা পিস্তল।

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই ঘণ্টার জিম্মি সঙ্কটের অবসানের পর রোববার রাতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবার রহমান একথা জানান।

তিনি বলেন, “তার কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে এটা ফেইক, খেলনা পিস্তল।”

পরে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীও রাতে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বলেন, ওই পিস্তলটি ছিল খেলনা।

চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমানের ফ্লাইটটি বিকালে ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার পর মাঝ আকাশে অস্ত্রধারী ওই যুবক যাত্রীদের ভয় দেখানোর পাশাপাশি ক্রুদের জিম্মি করেন।

বিমানে থাকা ওসমান গণি নামে এক যাত্রী বলেছিলেন, “ওই ব্যক্তি পিস্তল নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের বলে, কেউ উঠে দাঁড়ালে বা নড়াচড়া করলে গুলি করা হবে। এসময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ওই ব্যক্তি কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে।”

ঘটনা শুরুর পরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছিলেন, “যতটুকু জানা গেছে, একজন সন্দেহভাজন পাইলটের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিল।”

পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইজি আকমল হোসেন তখন বলেছিলেন, “ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর একজন যাত্রী ককপিটে ঢুকে পাইলটকে পিস্তল ধরে বলেছে, আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলিয়ে দিতে হবে। পাইলট ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চট্টগ্রামে অবতরণ করান।”

চট্টগামে বিমানটি অবতরণের পর প্রায় দেড়শ যাত্রীর সবাই এবং পাইলট ও ক্রুরা সবাই নেমে আসার পর একমাত্র ছিনতাইকারীকে ধরতে শুরু হয় সামরিক বাহিনীর কমান্ডোদের অভিযান। তাতে নিহত হন ওই যুবক।

অভিযানের পর এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলেছিলেন, ওই যুবকের কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

অভিযানের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “শুরুতে আমরা ছিনতাইকারীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। পরে সে আক্রমণাত্মক থাকায় স্বাভাবিক নিয়মে অভিযান চালানো হয়। এতে সে শুরুতে আহত হয়। পরে নিহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিমানের মধ্যে তার সাথে আমাদের অ্যাকশন হয়েছে, পরে সে বাইরে নিহত হয়েছে।”

বেবিচক চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান বলেছিলেন, “সো ফার আমি জানি, তার কাছে একটা অস্ত্র ছিল। বলেছে গায়ে বোম্ব জড়ানো আছে বা তার জড়ানো আছে। ওটা কী ছিল, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।”

ওই যুবকের আচরণ অসংলগ্ন ছিল বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

নিহত ব্যক্তির নাম ‘মাহাদী’ এবং তার বয়স ২৬/২৭ বছর- শুধু এতটুকুই বলতে পেরেছেন অভিযানে থাকা সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা। তার আর কোনো পরিচয় তারা দিতে পারেননি, পারেনি তার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও কিছু জানাতে।

বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী টিভি অনুষ্ঠানে বলেছেন, এক ‘চিত্রনায়িকার প্রেমে ব্যর্থ হয়ে’ ওই যুবক এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুবার বলেন, “পুলিশের এখন তদন্ত শুরু হল। তার পরিচয় এখনও নিশ্চিত করে কিছু পাওয়া যায়নি। তবে এ নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে।”

বিমান ছিনতাইয়ের এই ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সুত্রঃ সিলেটটুডে

Post a Comment

Previous Post Next Post