ভূমি অধিগ্রহণ ও দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্নের আগেই নির্মাণকাজের উদ্বোধন


বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রাজাপুর এলাকায় গত বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে প্রায় ৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মনু নদের ওপর একটি সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন হয়েছে। জাতীয় সংসদের হুইপ ও মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলা) আসনের সাংসদ মো. শাহাব উদ্দিন এবং স্থানীয় মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া উপজেলা) আসনের সাংসদ আবদুল মতিন যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই কাজের এখনো দরপত্র প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয়নি। করা হয়নি ভূমি অধিগ্রহণও।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাজাপুর এলাকায় সেতুর অভাবে পৃথিমপাশাসহ আশপাশের হাজিপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৫০ হাজার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এসব এলাকার লোকজন বর্ষা মৌসুমে নৌকায় ও শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদটি পারাপার হন। এ অবস্থায় নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) এক সভায় কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজিপুর-শরীফপুর সড়কের ১৪তম কিলোমিটারে রাজাপুর এলাকায় মনু নদের ওপর ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও ভূমি অধিগ্রহণসহ একটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৯৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। পরবর্তীতে মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগ এ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজাপুর এলাকায় সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন দুই সাংসদ।

ভূমি অধিগ্রহণ ও দরপত্র আহ্বানের আগেই সেতুর নির্মাণ কাজের স্থাপন প্রসঙ্গে কুলাউড়া সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুল হক শুক্রবার (২ নভেম্বর) দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, ‘রাজাপুর সেতুর টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করা হয়ে গেছে। এখনো ঠিকাদার নির্ধারণ হয়নি। ঠিকাদার নির্ধারণের পর ওয়ার্কঅর্ডার (কার্যাদেশ) দেওয়া হবে। এর পর কাজ শুরু হবে। এ কাজে আরও অন্তত দুই মাস সময় লেগে যেতে পারে।’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে অনুমোদন পাওয়া গেছে। দ্রুত এ কাজ শুরু হবে।

এসব প্রক্রিয়া শুরুর আগেই কেনো নির্মাণকাজের উদ্বোধন হলো জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে শুক্রবার বিকেলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাংসদ আবদুল মতিন ফোন ধরেননি।

সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী অরুণ কালোয়ার মুঠোফোনে বলেন, ‘স্যার (সাংসদ) মিটিংয়ে আছেন। রাজাপুর ব্রিজের টেন্ডার ঢাকার এক জন ঠিকাদার পেয়েছেন।’ এর বেশি তিনি আর কিছু বলতে পারেননি।

Post a Comment

Previous Post Next Post