ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মনসুরকে বরনে কুলাউড়ায় জনস্রোত



বিশেষ প্রতিনিধিঃ  জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রক্রিয়ার অন্যতম নেতা ও সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে কুলাউড়ায় পৌঁছেছেন। পারাবত ট্রেন যোগে তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া)-এ এসে পৌঁছান তিনি। সোমবার (২৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে তাঁকে বরণ করেন সুলতান অনুসারীসহ বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

স্টেশনে পৌঁছা মাত্র হাজার হাজার সুলতান সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা তাঁকে ঘিরে ফেলে। সেখান থেকে বের হয়ে স্টেশন চৌমুহনী এলাকা হয়ে উত্তরবাজার প্রধান সড়ক অতিক্রম করে কুলাউড়াস্থ নিজ বাসায় যান। সেখানে নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।

সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, আজকে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত, আজকে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে না। কারণ মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে।



নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রশাসনকে অনেকটা জিম্মি করে, আজকে তাদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে আপনাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে। প্রশাসনের যে সমস্ত ভাই-বন্ধুরা আছেন তাদের কেউ আমাদের আত্মীয়, কেউ আমাদের বন্ধু। কেউ আমাদের আত্মীয়স্বজন। তাদের উপর আপনাদের কোন রকম বিরক্ত কিংবা আক্রমণাত্মক মনোভাব যেন না থাকে।

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যদি আপনারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র চান, আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দিব এই পরিবেশ যারা চান, গুম হত্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য, মুক্তি পাওয়ার জন্য আজ আপানদের এক হতে হবে। কুলাউড়ার ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সকল মা-বোনদের কাছে আমাদের এই তথ্য পৌঁছে দিতে আপনারা কাজ করতে হবে। 

তিনি বলেন, ধানের শীষ বাংলাদেশের মানুষের অতি পরিচিত একটি মার্কা তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ এই মার্কায় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন সদস্য হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসাবে আমি আপনাদের আহ্বান জানাবো, আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে সকল দল, মত, পথের সকলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করি। দেশের মানুষ যাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে তারাই হবে আগামী দিনের মানুষের সেবক। সেখানে আমি আপনাদের সেবক হতে চাই। 

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন. আপনাদের যদি মনে হয় আমাকে দিয়ে এই কুলাউড়ার উন্নয়ন সম্ভব, কুলাউড়ার মানুষের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব, যদি আজ থেকে ২৫ বছর আগে আমি যে কুলাউড়ার উন্নয়ন রেখে গিয়েছিলাম, যা আজ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সেই উন্নয়ন আবার ফিরিয়ে আনতে যদি আমাকে আপনাদের সেবক হিসেবে কাজে লাগে তবে এই কুলাউড়ার গ্রামেগঞ্জে প্রত্যেকে এক একজন সুলতান মনসুর হয়ে কাজ করতে হবে। 

তিনি বলেন, আমার এতো টাকা-পয়সা নাই, আমি টাকা দিয়ে মার্কা কিনি নাই, কোন টাকার কাছে আমি মাথা করি নাই, কোন হুমকির কাছে মাথা নত করি নাই। কোন ব্যক্তি নাই বাংলাদেশে যে আমাকে টাকা দিয়ে অথবা ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে আমার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতি ঘটাতে পারবে। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে যাব। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, কুলাউড়ার মানুষের উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব।

এর আগে তাঁর আগমন উপলক্ষে সকাল ১১টা থেকে ঐক্যফ্রন্টের শরীক বিএনপি এবং সুলতান মনসুরের সমর্থকরা কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন ও তার আশেপাশে অবস্থান করে। আর অন্যদিকে যাতে তারা সভা-সমাবেশ, মিছিল করতে না পারে এবং কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশ তৎপর ভূমিকা পালন করে। 

২৬ নভেম্বর সোমবার বেলা ১১টার দিকে কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ শহরের প্রধান সড়কসহ কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত শোডাউন প্রদর্শন করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে এখন কোন প্রার্থী সভা, সমাবেশ, মিছিল করতে পারবে না। তাছাড়া সুলতান মনসুরের আগমন উপলক্ষে যাতে নেতাকর্মীরা কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য পুলিশ তৎপর আছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post