কুলাউড়ায় রোগীকে ভুল রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগ


বিশেষ প্রতিনিধিঃ কুলাউড়া উপজেলার তাজমহল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে রোগীকে ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রোগীর স্বজনরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঘেরাও করলে কর্তৃপক্ষ তাদের গাফিলতির কথা স্বীকার করেন। এদিকে তাজমহল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনিশিয়ান মাহফুজুর রহমান দাবি করছেন তার স্বাক্ষরিত যে রিপোর্ট রোগীকে প্রদান করা হয়েছে সে স্বাক্ষর তার নয়!

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর কুলাউড়ার পৌর শহরের শিবির এলাকার বাসিন্দা রোফিয়া বেগম (৫০) এর শরীর খারাপ করলে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ অফিসার ডাঃ মোহাম্মদ নূরুল হকের চেম্বারে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডায়াবেটিস, আলট্টাসনোগ্রাফি ও হিমোগ্লোবিন জানার জন্য পরীক্ষা করাতে রোগীর স্বজনকে বলেন ডাক্তার নূরুল হক। রোগীর স্বজনরা পাশ্ববর্তী তাজমহল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়ে একে একে তিনটি পরীক্ষা সম্পন্ন করান। পরীক্ষার রিপোর্টে রোগীর কোন রোগ ধরা পড়েনি। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার প্রাথমিক কিছু ওষুধ দিয়ে দেন।

রোগীর ছেলে জুবায়ের আহমদ রুহেল জানান, ২ দিন পর (২৫ অক্টোবর) রাতে তার মায়ের শারীরিক অবস্থার ব্যাপক অবনতি হলে দ্রুত সিলেট ওসমানি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবারও ডায়াবেটিস, আলট্টাসনোগ্রাফি ও হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করান। সিলেটের পপুলার মেডিকেল সেন্টারের দেওয়া রিপোর্টে ধরা পড়ে রোফিয়া বেগমের হিমোগ্লোবিন ৯.৬ জিএম/ডিএল যা কুলাউড়ার তাজমহল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টে দেখানো হয় ১২.৪৮ জিএম/ডিএল। তাজমহলের আলট্টাসনোগ্রাফিতে কোন সমস্যা ধরা না পড়লেও সিলেট পপুলারে করানো রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় রোগীর তলপেটে সিভিয়ার ইনফেকশন রয়েছে। যেখানে মারাত্মক পাসফর্ম (পুঁজ) সৃষ্টি হয়েছে।

ভিত্তিহীন রিপোর্ট দেওয়ার কারণ জানতে রোগীর স্বজনরা গত ২ নভেম্বর রাতে তাজমহল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঘেরাও করলে ম্যানেজার আব্দুস সত্তার, অন্যতম স্বত্ত্বাধীকারী আতিকুর রহমান আনু তাৎক্ষণিক তাদের ভুল স্বীকার করে রোগীর স্বজন ও উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমা চান।

এ বিষয়ে তাজমহল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনিশিয়ান মাহফুজুর রহমান বলেন-‘ হিমোগ্লোবিন রিপোর্টে আমি কোন স্বাক্ষর করিনি। এমনকি আমি সে রিপোর্টটি দেখিও নি। সেন্টার থেকে আমার অজ্ঞাতে রোগীকে রিপোর্ট দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে তাজমহল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অন্যতম স্বত্ত্বাধীকারী আতিকুর রহমান আনু বলেন-আমাদের ভুল হয়ে গেছে। এখন থেকে আমরা সংশোধন হব।

এ প্রসঙ্গে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ অফিসার ডাঃ মোহাম্মদ নূরুল হক জানান-রিপোর্ট কোনটা ভুল সেটা এখন বলা যাবে না। তবে আমি একজন ডাক্তার হিসাবে বলতে পারি রিপোর্টের ফলাফল কাছাকাছি।

Post a Comment

Previous Post Next Post