২২টি গণমাধ্যমের ওয়েবসাইট নকলকারী এনামুল গ্রেপ্তার


অনলাইন ডেস্কঃ গণমাধ্যমের ওয়েবসাইট নকল করে মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে পিএইচডি গবেষক এনামুল হককে আটক করেছে র‌্যাব। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে তাঁকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

এর আগে গত বুধবার থেকে এনামুল হক নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় পরিবার রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে, এনামুল হক ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে বৃত্তি পেয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় পিএইচডি গবেষণায় চলে যান। সেখানে গবেষণার চেয়ে তাঁর মনোযোগ ছিল কিভাবে নকল সাইট তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। নকল সাইট তৈরিতে তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশ, কোরিয়া ও ইতালিতে বিশাল একটি চক্র রয়েছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।

র‌্যাব-২-এর কর্মকর্তা মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, নকল সাইট ভিজিট থেকে যে আয় হতো, তার ৭০ শতাংশ ছাত্রশিবিরের তহবিলে জমা হতো।

র‌্যাব জানায়, এনামুল বিভিন্ন পত্রিকা নকল করে উদ্দেশ্যমূলক মনগড়া নিউজ করতেন। ইন্টারনেট ছিল তাঁর প্রধান মাধ্যম। দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে তিনি দেশ-বিদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, এনামুল হক কোরিয়ায় বসে কালের কণ্ঠ, বাংলা ট্রিবিউন, বিবিসি বাংলা, প্রথম আলোসহ অন্তত ২২টি খ্যাতনামা গণমাধ্যমের ওয়েবসাইট নকল করার কথা স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশে বসে তাঁর মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে ডোমেইন কিনতেন, এরপর কোরিয়ায় বসে নকল সাইট তৈরি করতেন।  www.banglatribune.com-এর আদলে একটি ইংরেজি অক্ষর  ‘আই’ যোগ করে ওই ওয়েবসাইট খোলা হয়। এনামুলের গ্রামের বাড়ি পাবনায়। তাঁর বাবার নাম ফজলুল হক।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বৃত্তি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কিওংপুক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (কেএনইউ) পিএইচডি করছেন এনামুল।

এর আগে পরিবার দাবি করেছিল, গত বুধবার দক্ষিণখান থানাধীন আশকোনা এলাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। তবে র‌্যাবের তদন্তে এমন কোনো তথ্য মেলেনি। র‌্যাব-২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, এনামুলকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কমলাপুর রেলওয়ে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। জিডির বরাত দিয়ে দক্ষিণখান থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, গত বুধবার দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য আশকোনার বন্ধুর বাসা থেকে রাত ১০টার দিকে বের হয়েছিলেন এনামুল হক মিলন। রাত ১টায় তাঁর বিমানে ওঠার কথা ছিল। বন্ধুর ছোট ভাই তাঁকে রিকশায় উঠিয়ে বিদায় দেন। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত চলছে।

এনামুলের বড় ভাই কামরুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘দক্ষিণখান থানা পুলিশের মাধ্যমে জানানো হয়, এনামুলকে র‌্যাব আটক করেছে। তবে র‌্যাবের পক্ষ থেকে যে অভিযোগে তাকে আটকের কথা বলা হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে তা কতটুকু সত্য তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এর পরও আমরা জানার চেষ্টা করছি।’

Post a Comment

Previous Post Next Post