যক্ষ্মা রোগী লাখে ২৬০ জন: জরিপ

অনলাইন ডেস্কঃ দেশে প্রতি লাখে ২৬০ জন মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। তবে গ্রামের তুলনায় শহরে যক্ষ্মা আক্রান্তের হার বেশি।

‘ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস প্রিভেলেন্স সার্ভে বাংলাদেশ ২০১৫-১৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বাংলাদেশ আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই যক্ষ্মামুক্ত হবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতে মজবুত অবকাঠামো রয়েছে। পোলিও, ধনুষ্টঙ্কার মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ, শিগগিরই যক্ষ্মাও মুক্ত হবে।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যক্ষ্মা এখন আর মরণঘাতী রোগ নয়। যক্ষ্মা নিরাময়যোগ্য, নিয়মিত ওষুধ সেবন করলে যক্ষ্মা ভালো হয়। রোগী নিয়মিত ওষুধ সেবন করে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে সফলতা পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে জনগণের মধ্যে আরো সচেতনতা বাড়াতে হবে। যক্ষ্মার উপসর্গ দেখা দিলে রোগীদেরও সচেতন হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। যক্ষ্মা শনাক্তের জন্য সারা দেশে জিন এক্সপার্ট মেশিন সরবরাহের চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।

সারা দেশে এক লাখ মানুষের ওপর পরিচালিত এ জরিপে দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষের মধ্যে যক্ষ্মা আক্রান্তের হার বেশি। প্রতি ১ লাখে ৪৫২ জন পুরুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত, এর বিপরীতে নারী লাখে ১৪৩ জন। বেশি বয়সীদের মধ্যে যক্ষ্মায় আক্রান্তের হার বেশি। এছাড়া গ্রামের তুলনায় শহরে যক্ষ্মা রোগী বেশি।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোয় মাত্র ১০ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে। বেসরকারি খাতে চিকিৎসা নেয় ৫১ শতাংশ রোগী। যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা আরো বাড়ানো উচিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডব্লিউএইচওর তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি লাখে ৪০০ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত। কিন্তু নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ থেকে ২০৬ জনে নেমে এসেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব কমেছে।

জাতীয় যক্ষ্মাবিষয়ক জরিপ টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষের মধ্যে যক্ষ্মার প্রবণতা বেশি। আবার অল্প বয়সীদের চেয়ে বয়সীরা যক্ষ্মায় বেশি আক্রান্ত হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সনাল, ডব্লিউএইচওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. এডউইন সালভাদর, নাটাবের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (যক্ষ্মা-কুষ্ঠ) ডা. সামিউল আলম বক্তব্য রাখেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post